মালোপাখির কবিতা

বাড়ি

রূপসা নদীর সাঁকো !
বললে ও ভাই  আজ সারাদিন  আমায় তুমি আঁকো  !

যেই এঁকেছি নদীর দু কুল, যেই এঁকেছি পাখি,
অমনি দেখি হাজার নাচের রাখী — !

ভালোবাসার ফুল হয়ে সব বললে কাছে এসে  !
আজ চলো যাই নতুন গানের দেশে   — !

দেশ মানে কি আকাশ, নাকি যা  খুশি হয় ডাকো ?
আলো আশার হাত দুটিকে বুকের ওপর রাখো  !

হাতছানি দেয় রূপকথা আর তাল তমালের সারি !
সেইতো আমার ধান পতাকা বাড়ি  —  !

এই পৃথিবীর স্বপ্ন জানে

ঘন সবুজ আলোয় মোড়া একটি তারার শুদ্ধ হাসি ,
চিনবো বলেই হরিণ হয়ে আলোক ধারার স্বর্গে আসি  ।

তাই বাজে এই পাতার হৃদয়। অরূপ কথার গন্ধে মাখা ,
শিরায় শিরায় যায় বয়ে রঙ– নদীর মতো মগ্ন শাখা  ।

শাখায় শাখায় রূপ অপরূপ!দিন হলে শেষ ইচ্ছে পরী ,
শিউলি, টগর পড়তে থাকে  তাই দেখে মেঘ অশ্বে চড়ি — !

ঘন সবুজ আলোয় মোড়া সেই তারাটির গুঞ্জ গানে —
আমার মনও চাঁদ হয়ে যায় এই পৃথিবীর স্বপ্ন জানে   !

ওড়ে কদম মাস

হাত তালি দেয় হালুম হুলুম রূপোলী এক বাঘ  ।
এখনও সেই আবীর মনে কুসুম  বেলার দাগ  ।

টাপুর-টুপুর  রূপকথা পুর । মেঘ বালিকার গান ।
আকাশ ভরা রামধনু দিন । মাঠ ভরা সব ধান  ।

রূপ ঝুমা ঝুম ঝুমঝুমি রোদ । পাখির মতো সুখ ।
গাছের নীচে কিশোরী আর একটি কিশোর মুখ ।

বুকের ভিতর অনেক তারা । ঘাসের কুঁড়ি । ঘাস ।
ডানা নাড়ায় রূপকথা পুর  — ওড়ে কদম মাস ।

ছাগল জিরাফ

এবার বলি গোপন কথা
কাঁদলে ছাগল দশঘড়ায়  !
দু-চোখ দিয়ে লাগাম ছাড়া
টাটকা চিনির রস গড়ায়   !!

রসের বিলে গাউন খুলে
ময়না পুরের চার জিরাফ  !
মনের সুখে সাঁতার কেটে
খায় রে পাঁপর আর সিরাপ  !!

ঠিক যেখানে

পুনু পুনু কোথায় পুনু ? ওইতো কবি ডাকো  !
এপার ওপার মাঝখানে সেই রূপসা নদীর সাঁকো   !

রঙ নেমেছে হরিণ ক্ষেতে ! ডাকছে কি এক পাখি
আপন মনে চাঁদের আলোয় একলা জেগে থাকি !

শিউলি পাতা দুলছে ! কিযে চারটি জবার কুঁড়ি
বলছে আবার চলনা সবাই ওড়না হয়ে উড়ি  !

আয়তো খেলি চু কিত কিত খেলতে খেলতে শেষে   !
ছড়িয়ে যাবো আমরা সবাই মেঘনা মেঘের দেশে !

হারিয়ে যাবো আমরা আবার সবুজ টিলার ঘাসে
ঠিক যেখানে জলছবি ঘর নাচতে নেমে আসে

একটি প্রীতির রাখী

জরির টোপর পাল তোলা মেঘ ,
একটু তাকাও যদি  ;
দেখবে হেসে টাপুর-টুপুর
বইছে গানের নদী — !

তার পাশে সব এতোল বেতোল,
নাম না জানা গাছে ;
শিউলি-টগর- বকুল -পলাশ
ফুলরা ফুটে আছে  !

জল চিক চিক, গান চিক চিক ,
ঝিনুক পুঁতির খোঁজে  ;
একটা মানুষ ঢেউ হয়ে যায় —
কেউ কি সেটা বোঝে  ?

কেউ বোঝেনা, কেউ বোঝেনা,
নীল পালকে মুড়ে  ;
লোকটা ক্রমেই যায় হারিয়ে
দূরের থেকে দূরে  — !

দিন থেকে রাত ছুটতে ছুটতে —
মন ভোলা তার ছবি ;
নিঝুম পুরের হাওয়ায় ভাসে —
ঠিক যেন সে কবি   !

তুমিই তবে জরির টোপর ,
পাল তোলা মেঘ পাখি ;
লোকটাকে রোজ পরিয়ে দিও
একটি প্রীতির রাখী  !

Facebook Comments

comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

scroll to top