আমার কথা
বর্তমানে মিনিয়েচার আট আধুনিক শিল্পে উন্নীত হয়েছে। এক সময় প্রাচীন গ্রিসে দেওয়ালচিত্রে মিনিয়েচার
বা অনুচিত্রের অংকনরীতির প্রচলন ছিল। এছাড়াও প্রাচ্যশিল্পে এই শিল্পধায়ায় ব্যাপক চিত্র চর্চিত হতো।
বিশেষত পারসিক ও মুগল মিনিয়েচার চিত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। ভারতের চিত্রকলায় ‘মুগল মিনিয়েচার’
একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে-যা বিশ্বশিল্পকলার ইতিহাসে সমাদৃত। আমাদের বাংলাদেশে এই
শিল্পরীতিতে কম-বেশি শিল্পচর্চা করে থাকেন শিল্পীরা। তবে আধুনিক ফর্মে। Miniature Art’ শব্দের
আভিধানিক অর্থ হলাে ‘অনুচিত্র’ বা ক্ষুদ্রাকৃতির শিল্পকর্ম। Miniature’ শব্দটি এসেছে ‘Millennium
থেকে। মিনিয়েচার শিল্পরীতিতে আমি প্রায় ৫০০ টির মতাে শিল্পকর্ম নির্মাণ করেছি মিশ্রপ্রকরণে। এই
শিল্পকর্মগুলাে থেকে ১০১টি চিত্র নির্বাচন করে একটি আকর্ষণীয় একক প্রদর্শনী করার প্রয়াস পেয়েছি।
প্রতিদিন খবরের কাগজে নানা খবর ও আলােকচিত্র ছাপা হয়ে থাকে। আমি এই খবরের কাগজ থেকে পছন্দ
মতাে ছবির ইমেজ সংগ্রহ করে বিষয়বস্তুর সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ওয়েল প্যাস্টেল, কালি-কলম ও অ্যাক্রেলিকের
সংমিশ্রণে আধুনিক শিল্প আঙ্গিকে মিনিয়েচার চিত্রকর্ম নির্মাণে অন্বিষ্ট হই ২০০৭ সালে। প্রকৃতি, চলমান
জীবনযাত্রা, দুর্যোগ, সমাজের নানা অসঙ্গতি, সমাজের অবক্ষয়, সময়ের বেড়াজালে আবদ্ধ মানবকুল,
সুখ-দুঃখ ইত্যাদি বিষয়াদি অর্ধবিমূর্ত ও বিমূর্ত আধুনিক ফর্ম, উজ্জ্বল, নমনীয় বহুবর্ণ বিন্যাসে নান্দনিক
চিত্রগড়ণে এক মহিমান্বিত শিল্পসত্তার সন্ধানে বিনিসুতােয় গেথেছি-এই মিনিয়েচার শিল্প-সম্ভার। এই
শিল্পমালার শিরােনাম হয়েছে ‘জীবন ও সময়ের আখ্যান-১’। এই শিল্পধারার একক প্রদর্শনীতে সম্মানিত
কলারসিকগণ এক সঙ্গে অনেক শিল্প-সম্ভারের স্বাদ গ্রহণ করবেন-এ প্রত্যাশা রাখি।
প্রফেসর ড. হীরা সােবাহান
প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিন
চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগ
চারুকলা অনুষদ