মেঘঅ পিধে (মেঘের পিঠে) // আলোময় চাকমা // বাংলা অনুবাদ ম্যানিলা চাকমা

হেবার মনে কয় মেঘ’ পিধে

সনার চিঝিত্তুন।

মেঘকানি রইয়ে আগাজত,

দুরোত মাদিত্তুন।

একদিন এল’ তেনতেঙুরী,

নিল’ পিদিত গুরি।

চিঝি চেলগোই মেঘকানিরে,

আধত ধুরি ধুরি।

সনার চিঝির ভারী ধাপ মেঘঅ দেজত যেবার। কি দোল দোল মেঘকানি। রাঙাঁ মেঘ, রাঙুঁচ্যে মেঘ, ধুব মেঘ, ধোলোচ্যে মেঘ। সেমেত তুলো ধক ধুব ধুব মেঘকানিত গুচ্ছেলে ভারী সুঘ অব পারা পায়। মাত্তর কালা চুক চুক মেঘকানি তে দেই ন’ পারে। এক্কাঅলে ঝলগা বুইয়ার এনেই সংসারান ঝিন্দ্রুক হিন্দ্রুক গুরি দে। সে লগে এযন বড় বড় দেবা পেরাক।

মাত্তর পেরাগ আ কালা কালা মেঘ চাক্কুন গম ন’ লাগিলেও গম লাগিদ ঝড়ানি। উত কালা অয় সং ঝড়ত ভিজদে গম লাগিদ। সিত্তুন বেশ গম লাগে কানানি দ্বিবে আঙুলে হাক্কে ধিবে দিনেই আ হাক্কে নাদিনে শুনি থাক্কে। যুনি শিল পড়ন, সালে হুজিয়ে পরান ছচ্ছদায়। তাম্মা কয়, সে শিলুন হেলে ভিলে জিংকানিআন সেভাকাজে ন’ ধরে। বেশগুরি শিল পল্লে শিলুন ফাল্লে ফাল্লে ঘরত সমান্দি। হানা, কদক হেবে…

মুয়োত দিলে মুয়োভেদা সন মরে। কি সোত!

চিঝি ভাবে শিলুন সেত্তমান সোত আ মেঘকানি কত্তমান সোত অব’ কিজেনি? আমিজে ভাবে, যুনি পেক অদ’ তে জিংকানিআন মেঘে মেঘে ভুঙিঁ ভুঙিঁ কাদে দিলুন। মাদিত নয়ও লামিলুন। পেঠ পুড়িলে মেঘ হেলুন, এ মেঘ চাগত্তুন উউ.. মেঘ চাগত বেড়ে বেড়েই থেলুন।

একদিজে চিঝি মোনো পিদিত ইজরত বোই আঘে। মুজুঙোত্ ফুরুত গুরি ইক্কো তেনতেঙুরী উড়ি এল’। রাঙাঁ চিক চিক দ্বিআন দুয়ো। কিয়াগানও রাঙাঁ। লেজচান্ বানবান। মাত্তর চোখকুন্ য়্যেল চুকচুক। গত্তনাবো হাক্কে ইন্দি হাক্কে উন্দি ঘুরে পারে। বড় বড় দ্বিবে চোখ। এল’ দ’ এল’ ; তে নয় পা চিঝিরে কত্তে

– ও ভেই আ কি ভাবর?

চিঝি এব্রে আহমক! ওমা, আ তে কি দোলে কধা কয়বো। চিঝি সোরোত গুরি বুদ্ধি নিগিলেল’।

তেও কল’…

– ভাবঙর, মরও যুনি তমা সান্নে দুয়ো থেদ’।

: তে কি গোল্লিন?

: কি গোল্লুঙুননন….।

ঈদোত উদিল তার দ’ মেঘ হেবার ধাপ। মেঘ’ দেজত যেবার আওচ।

ইক্কো আঙুল্লোই মেঘকানি দেঘেদি কল’,

– উউউ… মেঘকানিত গেলুঙুনআই। তেনতেঙুরীবো কল’, মুই বেশ উড়ি ন’ পারং কুত্তুন। মুই আগাজর তলে তালাত উড়ং। তুই যেবার চেলে মুই তরে নাদেংকুট্টিবোলোই এগত্তর গুরি দি পারিম। তে ম’ উগুরেন্দিও উড়ি পারে। চিঝিও রাজী ওল। দেখকে দেখকে তেনতেঙুরীবো বিরাট ওল। চিঝি উদিল’ তা পিদিত। যাদন চে যাদন উড়ি। যাদে যাদে যাদেই… নাদেংকুট্টিবোলোই দেঘা। নাদেংকুট্টিবোই কল’ আ তুমি কুদু যেবা? তেনতেঙুরীবো মাদি উদিলো, ইঁ..তইদু দে যেত্তি।

তারে বেক্কানি ভাঙী কলাক। এবারত চিঝি উদিলো নাদেংকুট্টিবো পিদিত। বাহ! সে কি গঙ্! কানজাবা চুলানি বুইয়ারে উড়ের। যাদে যাদে যাদেইইই….লাগত পেলাক তদেক্কো। তার পরে উদিলো তদেক্কো পিদিত। তদেক্কো নেজাদে নেজাদে নেজাদেই… দিলগোই বার্গী পেক্কোরে। তে বার্গী পেক্কোয় দিলগোই ধভাশিল্লোরে। ধভাশিল্লোয় কয়,,, মুইদ’ বেশভাক মেঘ হে হে থাং। মুই তরে ইক্কিনে মেঘ’ দেজত লুমে দিম্মোই। তে চিঝি ধভাশিল্লো পিদিত গুরি যাদে যাদে যাদেই…

এক্করে মেঘকন্যাবো উদনত। মেঘকন্যাবো পিঠদি উদোন চ্যুরের। উদনত কনঅ ফেজা নেই। গমে চায়দি কন শিল। দেবাবো ঝড় দিলে যিয়ুন তারাইদু পড়ন। মনে কত্তে পেদে পেদে আজুর গুরি গুরি ল’। পাওলুঙ পাওলুঙ হা। কেনে হানা…। লাজ গরে পারা। মেঘকন্যাবোরে রেনি চেল’। বাহঃ! কি দোল! মেঘকোই হবং বান্নে, মেঘর হাদি, মেঘর পিনোন। পিননর চাবুগীবো রানজুনিলোই বুন্যা। হাদি পেলুন রানজুনিলোই বুন্যা অলেও সিয়ুন এক্কা চিগোন চিগোন। ভরন ভিরোন মেঘকন্যাবো বুক্কো জ্বলের হাদি পেলুন্দোই। মেঘর গাজ, মেঘর বাজ, মেঘর ঘর। যিন্দি চায় সিন্দি দোল! উদোনর দোগিন ধাগেদি বিরাট গাজ। চায়দি বিজিবিজিইই…শিল ধুলদন। ঝুড়ি পত্তুন ফুক ফুক গুরি। এ সিয়ুন মেঘকন্যাবো চ্যুরেত্তে। যিয়ুন যিয়ুন গাজ পাগানা আ মজদন সিয়ুন যানে জ্বলদন!

ধভাশিল্লো মেঘকন্যাবোরে ইক্কো জুউ জু দিল’। মেঘকন্যাবোও জুউ জু দিল’। ধভাশিল্লো কল’ ;

– মেঘকুমোরী! এ সনার চিঝিবো ভারী লোক্কি। ভারী গম…

তারে মেঘ’ পিধে হাবেবাত্তে তইদু আঞ্যঁং।

– অঃ!

গম অয়েআই কোইনেই ধাবা য়েই আজা গুরি ধরিলগি। ওমা! যানে উমমম….

এদক্কন সং আগাজে আগাজে উত্তে উত্তে কিয়েগান গদা জুরেয়্যে। মেঘকুমোরী আজাগুরি তা ঘরর চানাত বজেলগোই। এক্কান মেঘকোই বুন্যা বুরগি দিলগি।

বাহঃ, কি উমম!

কি তুমবাচ্!!!

কলাপাদালোই আনি দিল’ উমউম মেঘর পিধে। এক্কা এক্কা ভাপ উড়দন। জারাল্যে মুওত্তুন ভাপ উড়ে পারা। হেলে সোত। মুয়োত্ ভরেলে গলি যান। ইক্কো হেলে আরোক্কো হেবার মনে কয়।

দ্বিজনে মেঘ’ পিধে হাদন আ গপ মাত্তন। মেঘকুমোরী তারে কহর, আমি উদোন চ্যুরিনে যিয়েনি ফেলে দিই তমাইদু সিয়েনি শিল কনদে চ্যে। আ আমাইদু মিলেউনে মাধাঘুজি ফুরেলে যেক্কে চুলানি বাজ্যান, পানি নিয়িরেন সেক্কে তমাসিদু ঝড় পড়েদে। সনার চিঝি শুনি থায় আ আহমক অয়। মেঘকুমোরী তারে কয় তর যেদকদিন মনে কয় ম’ লগে থে পারিবে।

হুব হাক্কন পরে মেঘকুমোরীবো কয়দি যেই গাদিয়োই। মুই আর’ মাধা ঘুজি পেম্মোই। মেঘর মুড়ো, আ মুড়ো ছেরে জুড়ি। বেক মেঘকোই বানেয়্যে। সে জুড়িত তাগলক। তাগলগত্ তলে দ্বিজনে গাদদন। পানিয়েনিও মেঘর, সাওনানও মেঘর। মেঘকুমোরী কয়দি আয় চিঝিক্কো তরে সাওনদোই দুলি দুলি গাধে দোঙ। যেক্কে কিয়েত সাওন গুলি দের সেক্কে চিঝিত্তুন ছুচ্ছুরাত্তে… যেরেদি কিদিক কিদিক গুরি আঝি উদিল’। তাম্মা ঝাগারে ঝাগারে; – চিঝি আয়্যি ঘুমে ঘুমে আঝর? নেই, আ কি উয়ে? চিঝি ঘুমোত্তুন্ জাগিল’। রেনি চায়দি তাম্মা আজাগুরি আঘে। উত্তানি লেয়েই চায়দি এব’ মেঘ’ পিধের সোত বাঝি আঘে।

—–

মেঘের পিঠে // বাংলা অনুবাদ মেনিলা চাকমা

খেতে ইচ্ছে করে মেঘের পিঠে
সোনামণির
মেঘগুলো সব আকাশ জুড়ে
মাটির থেকে বহুদূরে

একদিন এলো গঙ্গাফড়িং
নিলো চড়িয়ে পিঠে
বাবু দেখলো মেঘগুলোকে
হাতে ছুঁয়ে ছুঁয়ে

সোনামণির ইচ্ছে খুবই মেঘের পিঠা খাওয়ার। মেঘগুলো ভারি সুন্দর। রাঙা মেঘ, লালচে আভার মেঘ, সাদা মেঘ উজ্জ্বলবর্ণের মেঘ। শিমুল তুলোর মত সাদা সাদা মেঘপুঞ্জরাশির মাঝে নিদ্রা হবে শান্তির মতন। কিন্তু অন্ধকার মেঘে তার ভীষণ বিরক্তি। অল্পতেই দমকা হাওয়া এসে ওলট-পালট করে দিয়ে যায় সংসার। সেই সাথে আসে বিদ্যুৎ চমকানি।
বিদ্যুৎ চমকানি তার ভালো লাগতো না মোটেই, তবে ভালো লাগতো বৃষ্টির পানি। ঠোঁট কালো হয়ে আসা পর্যন্ত তার ভিজতে ভালো লাগতো। আরো বেশি তার আনন্দ হতো। কখনো আঙুল দিয়ে কান বন্ধ করে কখনো কান থেকে আঙুল সরিয়ে বৃষ্টির শব্দ শুনতো। যদি শিলা বৃষ্টি হয় আনন্দে তার চঞ্চল প্রাণ নেচে ওঠে। তার মা বলে, আকাশ থেকে নিপাতিত শিলা খেলে জন্মের মত সেরে যাবে সর্দি কাশি। আকাশ থেকে নিপাতিত ভারি বর্ষিত শিলা মাটি ছুঁয়েই নেচে নেচে ঘরে প্রবেশ করে।
খাও কত খাবে….
মুখে পুরলেই ঠান্ডায় জমে যায় মুখের ভিতরদিক।
খুবই সুস্বাদু !
শিশুটির মনে হয়, শিলা এত সুস্বাদু, না জানি মেঘগুলো আরো কত সুস্বাদু? নিত্যভাবে যদি পাখি হতো সে জীবনটা মেঘে মেঘে ভেসে ভেসে কাটিয়ে দিতো। মাটিতেই নামতো না। ক্ষুধা পেলে মেঘ খেতো, এ মেঘ থেকে ঐ মেঘের ভেলায় ঘুরে ফিরে থাকতো।
শিশুটি একদিন পাহাড়ের চুড়োয় ঘরের সম্মুখের মাচায় বসে আছে। সামনেই একটি গঙ্গাফড়িং উড়ে এল। গঙ্গাফড়িং এর লাল চকচকে দুটো পাখা। শরীর সম্পূর্ণ লাল টুকটুকে। লেজটা ডোরাকাটা। চোখ দুটো পাহাড়ের মত সবুজ। কখনো এদিক কখনো সেদিক করে ঘাড় নাড়াচাড়া করতে পারে। বেশ বড়সড় দুটো চোখ। এলো তো এলো; মনে হয় যেন সে নয় এমন ভাব ধরে সোনামণিকে বললো-
….ও ভাই কি ভাবছো এতো ?
সোনামণি একবারে বিস্মিত ! ওমা তুমি এত সুন্দর করে কথাও বল। সোনামণি খুব তাড়াতাড়ি একটা বুদ্ধি বের করলো।
সেও বললো…..
…ভাবছি, আমারও যদি তোমাদের মত ডানা থাকতো।
: তাহলে কি করতে ?
: কি করতাম………।
সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ে গেল তার মেঘ খাবার ইচ্ছের কথা। একটি আঙুল উঁচিয়ে মেঘ দেখিয়ে দিয়ে বলল,
…ওই-ই…..মেঘেদের দেশে যেতাম।
গঙ্গাফড়িং বললো, আমি তো বেশি উড়তে পারি না সোনামণি। আমি আকাশের অনেক নিচে ওড়াওড়ি করি। তবুও তুমি যেতে চাইলে আমি তোমাকে ভরতপাখির সাথে দেখা করিয়ে দিতে পারি। সে আমার চেয়ে অনেক উঁচুতে উড়তে পারে। সোনামনিও তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে গেলো। ধীরে ধীরে গঙ্গাফড়িং বিরাট আকার ধারন করলো। সোনামণি তার পিঠে চড়ে বসলো। তারা উড়েই চলেছে বহুদূর। যেতে যেতে অনেকপথ পেরিয়ে তাদের সাথে দেখা হল ভরতপাখির।
ভরতপাখি বলল, তোমরা কোথায় যাবে ভাই ?
গঙ্গাফড়িং বললো,
আপনার কাছেই যাচ্ছিলাম।
গঙ্গাফড়িং সোনামণির মনের সব কথা খুলে বলল ভরতপাখির পিঠে চড়ে। বাহ ! তার পাখার সে কি গতি। কানের পাশে চুলগুলো বাতাসে উড়ছে। যেতে যেতে তার সাথে দেখা হল টিয়া পাখির। এখন সোনামনি আবার চড়ে বসলো টিয়ার পিঠে। টিয়া তাকে পৌছে দিলো বার্গী পাখির কাছে। সে সোনামনিকে পৌছে দিল ঈগলের কাছে। ঈগল পাখি বলে আমি তো প্রায়ই মেঘ খেয়েই থাকি। আমি তোমাকে এক্ষুণি মেঘের দেশে পৌঁছে দিয়ে আসছি। এবার সোনামণি ঈগলের পিঠে চড়ে যেতে যেতে একেবারে পৌঁছে গেল মেঘ কন্যার আঙ্গিনায়। মেঘবতী কন্যা তখন আঙ্গিনা ঝাড়ায় ব্যস্ত। সে ভালোভাবে তাকিয়ে দেখে সবই শিলা। বৃষ্টি হলে যে শিলা পৃথিবীতে পড়ে সেগুলো। সোণামণির ইচ্ছে করছিলো দুহাত ভরে শিলাগুলো কুড়িয়ে নিতে। গাপুস গুপুস করে মুখে পুরে দিতে। কি করে খাবে ? তার যে ভীষণ লজ্জা। মেঘবতী কন্যাকে তাকিয়ে সোনামণি দেখলো বাহ্ ! কি সুন্দর মাথায় মেঘের পাগড়ী, মেঘের খাদি, মেঘের পিনন ! পিনোনের চাবুগীটাও রংধনু দিয়ে বোনা। খাদির ধারগুলো ছোট ছোট করে রংধনু দিয়ে বোনা। মেঘবতী কন্যার সৌষ্ঠব শরীরে বুকের উপর জ্বলছে খাদির চকচকে ধারগুলো। সোণামণি তাকিয়ে দেখে মেঘের গাছ, মেঘের বাঁশ, মেঘের ঘর। যেদিকে তাকায় সেদিকেই সৌন্দর্যের অপার লীলা খেলা। দক্ষিণের আঙ্গিনায় প্রকাণ্ড একটি গাছ। সে দেখতে পায় সেই গাছের ডালে বিন্দু বিন্দু শিলা জমে রয়েছে। টুপটুপ করে সেগুলো ঝরে পড়ছে। সেগুলো মেঘবতী কন্যা ঝেড়ে ফেলে দিচ্ছে। শিলা যেগুলি গাছে রয়েছে সেগুলি চিকচিক করে জ্বলছে।
ঈগলটি মেঘবতী কন্যাকে অভিবাদন জানালো। মেঘবতী কন্যাও তাদের স্বাগত জানালো।
ঈগল বলে-
– মেঘবতী কন্যা ! এই সোনামণিটা খুবই লক্ষ্ণী। খুবই ভালো আর মিষ্টি। তাকে তোমার কাছে মেঘের পিঠে খাওয়াতে নিয়ে এসেছি।
– হুম
– মেঘবতী কন্যা তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে। আর বলে, খুবই উষ্ণ।
এতক্ষণ আকাশের পর আকাশ পেরিয়ে আসতে আসতে শরীর যেন ঠান্ডায় জুড়িয়ে গেছে। মেঘকুমারী তাকে জড়িয়ে ধরে ঘরের চানাত বসালো। মেঘ দিয়ে বোনা একটি কম্বল দিলো।
বাহ: কি উষ্ণ !
কি সুবাস !
কলাপাতায় মোড়া গরম গরম মেঘের পিঠে এনে তাদের খেতে দিলো। পিঠেগুলো থেকে গরম ধোঁয়া উঠছে। শীতকালে মুখ থেকে যেমন বাষ্প ওড়ে ঠিক তেমন। খেতে বেশ সুস্বাদু। মুখে পুরলেই গলে যায়। একটা খেলে আর একটা খেতে ইচ্ছে করে।
দুজন মিলে মেঘ পিঠে খাচ্ছে আর গল্প করছে। মেঘকুমারী সোনামনিকে বলে, আমি আঙ্গিনা ঝেড়ে যা ফেলে দিই তাই তোমাদের কাছে শিলা নামে পরিচিত। আমাদের এখানে মেয়েরা মাথা ধুয়ে চুল শুকানোর জন্য যখন চুলে বাড়ি দেয় তখন তোমাদের কাছে বৃষ্টি হয়। সোনামণি তার কথা শোনে আর বিস্মিত হয়। মেঘকুমারী তাকে বলে তোমার যতদিন ইচ্ছে তুমি আমার সাথেই থাকতে পারো।
অনেক্ষণ পরে মেঘকুমারী সোনামণিটিকে বলে চলো গোসল করে আসি। আমার মাথা ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মেঘের দেশে মেঘের পাহাড়ের মধ্যিখানে কুয়ো ঝরনা।
মেঘের দেশে পানিও মেঘের তৈরি, সাবানও মেঘের তৈরি। মেঘকুমারী বলে এসো সোনা তোমাকে আমি শরীরে সাবান দিয়ে ঘষে ঘষে গোসল করিয়ে দিই। শরীরে সাবান লাগাতেই সোনামণির সুঁড়সুঁড়ি লাগছিলো। তারপরই সোনামণি অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো।
সোনামণির মা ডেকে বলছে,
– বাবু ঘুমে ঘুমে হাসছো কেন ? কি হলো ?
বাবুসোনা ঘুম থেকে জেগে উঠলো। তাকিয়ে দেখে তার মা তাকে জড়িয়ে ধরে আছে। সে ঠোঁট চেটে দেখে মেঘের পিঠের স্বাদ এখনো তার মুখে লেগে আছে।

Facebook Comments

comments

১ Reply to “মেঘঅ পিধে (মেঘের পিঠে) // আলোময় চাকমা // বাংলা অনুবাদ ম্যানিলা চাকমা”

  1. গীতা দাস বলেছেন:

    নিজেদের সাহিত্যকে বৃহত্তর পরিসরে ছড়িয়ে দেয়ার মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

scroll to top