বেলাশেষের গল্প // সুজয় চক্রবর্তী

আমি বাড়িতে ঢুকেই দেখি বাবা সিঁড়ি দিয়ে হন্তদন্ত হয়ে নামতে নামতে বলছে, ‘থাকলো সব পড়ে, আমি আর ফিরছি না।’ কোথাও গেলে তবেই ফেরার কথা থাকে। মানে বাবা কোথাও যাচ্ছে তাহলে। কথাটা যে মাকে বললো বুঝলাম। তাই সোজা চলে গেলাম মা’র কাছে। বললাম, ‘মা, বাবা কোথায় যাচ্ছে?’
– তা আমি কি করে বলবো, তোর বাবাকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর!
– বাবা তো চলে গেল! তোমার সঙ্গে বাবার কি কোনও গণ্ডগোল হয়েছে?
– গণ্ডগোল তো রোজই হয়। আজ হঠাৎ ওনার কি হয়েছে বুঝলাম না!
– তুমি বাবাকে কিছু বলেছো?
– তোর বাবাকে কিছু বলা লাগে!
বোন এসে বললো, ‘ বাবা কোথায় যাচ্ছে, তুমি জানতে চাইবে না! ‘
– না। রোজ রোজ এসব ঝামেলা আমার ভালো লাগে না। যাচ্ছে যাক, রাগ কমলে আবার চলে আসবে।
– ও, যেহেতু গণ্ডগোল তোমার ভালো লাগে না, তাই তুমি চাও বাবা বাড়ি ছেড়ে চলে যাক!
– আমি তাই বললাম ? কি যা তা বলছিস!
দিদি এসে বললো, ‘যা তা না মা, রুমি ঠিকই বলেছে। তুমি সব সময় বাবার উপরে খ্যাঁচ খ্যাঁচ করো। এটা না সেটা, সেটা না এটা। যাতে বাবা আর না থাকে! যদি বাবা সত্যিই আর না ফিরে আসে, তবে কিন্তু ভালো হবে না, দেখো।
– তুই আমাকে ভয় দেখাচ্ছিস না কি? ভয় দেখাচ্ছিস! যা, এই রইলো পড়ে তোদের সব। আমিও চললাম।
মা-ও দেখি সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেল গটগট করে!

দিদির কথাটা একটু রুক্ষ মনে হল আমারও। ওরকম ‘হুমকি’ দেওয়া ঠিক হয়নি। মা বেরিয়ে যেতেই বোন তো দিদির উপর রেগে ফায়ার! দিদির জন্যই মা রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল! বাবা গিয়েছে, তারজন্য মন খারাপ ছিলই। মা চলে যাওয়াতে বোনের দু’চোখ ছল ছল করছে দেখলাম। দিদি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলো। আমরা এ ওর মুখের দিকে খানিকক্ষণ চেয়ে থাকলাম। কারওর মুখেই কোনও কথা নেই। বেশ অবাক লাগলো। কি এমন হল যে দুজনকেই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হল!

আমার বন্ধুদের কারও শুধু মা আছে, কারও শুধু বাবা। তবে ছোটবেলা থেকে নেপালের বাবা-মা দুজনেই নেই। নিখোঁজ। ও দাদুর বাড়ি থাকে। যাদের বাবা-মা দুজনেই থাকে না, তাদের নাকি অনাথ বলে। ভাবতে লাগলাম, আমরা কি তবে ‘অনাথ’ হয়ে যাবো ! বাবা-মা কি আর সত্যিই বাড়ি ফিরে আসবে না? আর যদি না আসে, আমাদের চলবে কী করে? আমি তো এখনও বেকার। একটার পর একটা চাকরির পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু শিকে ছেড়েনি আজও। এখনও চুল-দাড়ি কাটতে গেলে বাবার কাছে হাত পাততে হয়। দিদি, বোনেরও তো সেই একই অবস্থা! এদিকে দিদির বিয়ে ঠিক হয়ে আছে জিয়াগঞ্জে। ছেলের বাড়ির কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। আমাদের এখনও শুরু হয়নি। এসবেরই বা কি হবে! তবে খটকা একটা লাগলো। মা যখন বেরিয়ে গেল, দেখলাম মা’র পরনে জামদানী শাড়ি। পায়ে চামড়ার চপ্পল। চুলটুল সব ঠিক করে বাঁধা। এক কথায় বেশ সেজেগুজেই ছিল মা। ওদিকে বাবাও যখন সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাচ্ছিল, দেখেছিলাম বাবার গায়ে পাজামা-পাঞ্জাবি। পায়ে বাটার অফিস চপ্পল। মুখে একফোঁটা দাড়ি নেই। যত্ন করে কামানো। মনে হল সকালেই কেটেছে। তো যখন কেউ রাগ করে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাবে, তখন সে নিশ্চয় এত গোছগাছ করে বেরবে না! আর এখন ঘড়িতে দুপুর ঠিক বারোটা বাজে। গোছগাছ করতেও সময় লেগেছে। ধরে নিলাম এক ঘন্টা আগের কথা। তারপর এর ভেতরে আবার ঝগড়া হয়েছে। অর্থাৎ সব সকাল সকালই ঘটে গেছে। আমি তখন বাবুদার বাড়িতে জিকে সলভ করছিলাম। তাই কিছু জানতে পারিনি। কিন্তু বোন আর দিদি তো বাড়িতেই ছিল! ওরা তো গণ্ডগোল থামাতে পারতো। দিদিকে বললাম, ‘আচ্ছা, মা-বাবা যে ঝগড়া করছিল, তুই থামাতে পারিসনি?’
– শুনলে তো থামাবো!
– তুই কী করছিলি?
– গান শুনছিলাম বারান্দায়।
– হেড ফোন দিয়ে?
– না, এমনি।
– কারওর গলাই পাসনি?
– না।
বোনকে বললাম, ‘ তুই কোথায় ছিলি?’
– পড়ছিলাম।
– বাবা-মা’র ঝগড়া শুনতে পাসনি?
– না, শুধু একবার শুনলাম বাবা বললো, ‘আমার হয়ে গেছে’। কী হয়ে গেছে, অত বুঝিনি। তারপর তো সব চুপচাপই ছিল!

বাবার সঙ্গে মা’র টুকটাক খুঁটিনাটি লেগেই থাকে। ৪০ বছরের বিবাহিত জীবনে এটা নতুন কিছু না। কিন্তু আজকের দিনটা যেন একটু অন্যরকম মনে হল। বাড়ির একমাত্র ছেলে আমি। তাই চুপচাপ বসে থাকা যায় না। দিদি-বোনকে কিছু না বলেই সাইকেলটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।

নির্মলের গলির মুখে এসেও মাকে দেখতে পেলাম না। মা এত জোরে হাঁটতে পারে, জানতাম না। হয়তো রাগে রাগে তাড়াতাড়ি পা ফেলেছে। আশেপাশে যেসব পাড়াপড়শি আছে, যাদের বাড়ি মা যেতে পারে মনে হল, খোঁজ নিলাম সেখানে। মা যায়নি কোথাও। কেউ মাকে যেতেও দেখেনি। খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম। এদিকে বোন অনবরত ফোন করে যাচ্ছে মোবাইলে। ধরছি না। সেই তো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে জিজ্ঞেস করবে, ‘দাদা, মাকে পেলি? বাবাকে দেখেছিস? ‘ কী বলবো তখন, তাই ফোন বেজে চলেছে পকেটে। সাইকেল ঘুরিয়ে এলাম বাটার মোড়ে। পাশেই অটো-টোটো স্ট্যান্ড। সেখানে সাইকেল দাঁড় করিয়ে এদিক ওদিক চোখ ঘোরালাম, যদি চেনা কাউকে দেখতে পায়। পেলাম না। বাবা মোবাইল ব্যবহার করে না। তাহলে তো ঝামেলা মিটেই যেত। আর মা তো এখনও ফোন ধরাও শিখলো না। কারও ফোন এলে মা’র কানে ধরে দিলে তবে কথা বলে। খুবই সমস্যায় পড়লাম। কোনও আত্মীয় স্বজনকেও ফোন করা এখন ঠিক হবে না। কেননা কেউই ধারেকাছে থাকে না, যে বললাম আর ছুটে এল।

হরিদার চায়ের দোকানের বেঞ্চি ফাঁকা ছিল, বসে পড়লাম। এই রোদে চা খেতে ভালো লাগছিল না। তাই একটা সিগারেট ধরালাম। হরিদা সিগারেটও বেচে। বাসস্ট্যান্ডের ধারে দোকান বলে চলে ভালো। তবে এই দুপুর বেলাটা একটু ফাঁকা থাকে। মোবাইলে দেখলাম একটা বাজতে দশ। এই সময় কোথায় আর যাবো, বসে থাকলাম। আমার সাইনাসের প্রবলেম। রোদে ছাতা ছাড়া এক মুহূর্ত চলতে পারি না। তাড়াহুড়োয় ছাতা নিয়েও বেরোয়নি। কিন্তু বসে থাকলেও তো চলে না। ঘন ঘন ধোঁয়া ছাড়ছি দেখে হরিদা জিজ্ঞেস করলো, ‘ কিরে কাঞ্চন, খুব টেনশনে আছিস মনে হচ্ছে? ‘
– আর বলো না। বাবা-মা দুজনেই বাড়ি ছেড়ে চলে গেল! বাড়িতে এখন কান্নাকাটি পড়ে গেছে।
– সেকি! তোর বাবা-মা’কে যে একটু আগেই দেখলাম টোটোতে বসে ছিলো!
– কখন দেখলে? কোথায় দেখলে!
– এই আধ ঘন্টা আগে। টোটো স্ট্যান্ড থেকে টোটোতে উঠলো।
– সত্যি বলছো?
– মিথ্যে বলে আমার কী লাভ? যা দেখলাম, তাই বললাম। তাছাড়া তোর বাবা তো তারও আগে থেকে ঐ দেবদারু গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে ছিল। পরে তোর মা এলো।

হুঁ, হরিদা যে মিথ্যে বলছে না, আমি নিজেও বুঝতে পারছি। বাবা আগে বেরিয়েছিল। পরে মা। তার মানে দুজনে আগে থেকে প্লান করে তবেই বেরিয়েছে! কিন্তু দুজনেই এভাবে কাউকে কিছু না বলে যাওয়ার মানেটা কী? এভাবে আমাদের চিন্তায় ফেলে তারা কি আনন্দ পাচ্ছে! তবে এটাও হতে পারে, মা’র কয়েকদিন ধরে শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না। রুমি প্রায় বলতো, ‘ মা কবে ডাক্তার দেখাতে যাবে বলো। এভাবে আর ফেলে রেখো না।’ এখন কি সেই ডাক্তারের কাছেই গেল নাকি! কিন্তু তাহলেও তো দিদি বা বোন ব্যাপারটা জানবে! ওরাও তো কিছু জানে না বললো।

যাক, হরিদা যখন বললো দুজনকে একসঙ্গে টোটোতে দেখেছে, তাহলে আর কোনও চিন্তা নেই। দুজন দু’দিকে না, একদিকেই আছে। শুধু ভাবাচ্ছে বাবা-মা গেল কোথায়? রুমিকে একটা ফোন করা দরকার, ওরা চিন্তায় আছে। ডায়াল করলাম রুমির নাম্বারে। রিং হচ্ছে। কিন্তু কেটে দিতে হল। রাস্তার ওপার থেকে দেখি বিশেদা হাত নেড়ে নেড়ে ডাকছে। রাস্তার উল্টো দিকে বিশেদার চপের দোকান। ফোনটা পকেটে রেখে রাস্তা পেরোলাম। আমার কিছু বলার আগেই বিশেদা বললো, ‘ ভাই, বয়স হলেও মনটা যেন এরকম ভোরের সূর্যের মতোই তাজা থাকে। বুড়িয়ে যাওয়া শরীর নিয়ে চলা যায়, কিন্তু মন বুড়িয়ে গেলে সব অচল। সব অচল। এমনকি নিজেও।’ বুঝলাম না বিশেদার হেঁয়ালি মার্কা কথাবার্তা। তবে ওর কথাবার্তা এরকমই। বয়স ওরও কম না। কিন্তু ধরা যায় না। শরীর, মন দুই-ই তাজা। তবে সারাদিন কি খাটনিটাই না করে! সকালে সাইকেলে করে পাড়ায় পাড়ায় খবরের কাগজ ফেরি করে। বিকেলে এই কদমতলায় চপ-সিঙারার দোকান দেয়। বিয়ে করেনি। কিন্তু বাড়িতে লোকজন নেই, তা নয়। বিধবা মা, অবিবাহিতা বোন, দূর সম্পর্কের এক পিসি আর নিজে। সব চলে ঐ বিশেদার টাকায়। বিশেদা এখনও দোকান খোলেনি। মালপত্র কিনতে গিয়েছিল বড় বাজারে। ঝাপ খুলে মাল রাখছিল। বললাম, ‘ এরকম ভোরের সূর্যের মতো তাজা থাকার কথা বললে, কীরকম সেটা? ‘
– তোর বাবা-মা’র মতো। শরীরের বয়স বাড়ে বাড়ুক। মনের বয়স যেন না বাড়ে।
– কেন তা বলবে তো?
– কেন আবার, কাকু-কাকিমা এই বয়সেও যে একসঙ্গে সিনেমা দেখতে যাচ্ছে, এটাই তো তার প্রমাণ দিচ্ছে!
– একসঙ্গে সিনেমা দেখতে যাচ্ছে, মা-বাবা?
– হ্যাঁ, কেন তুই কি জানিস না?
– না। আমি তো বাবা-মাকেই খুঁজছি!
– খুঁজছিস! খুঁজছিস যখন চলে যা ‘মুক্তা’ সিনেমা হলে। একটা-চারটে শো। শেষ হলেই দেখা পাবি।
– তুমি কী করে জানলে?
– আমি তো মাল কিনতে গিয়েছিলাম ঐ দিকেই। দেখি টিকিটের লাইনে কাকু! পাশেই পানের গুমটির কাছে কাকিমা দাঁড়িয়ে ছিল।

খুব লজ্জা করছে আমার। এই বয়সে বাবা সিনেমার টিকিট কাটার লাইনে! বললে তো আমিই কেটে দিতে পারতাম। জানি ওখানে চলছে ‘বেলাশেষে’। সিনেমাটা যেদিন টিভিতে দিয়েছিল, মা কোনও কারণে হোক দেখতে পায়নি। মাসি ফোন করে বলেছিল, ‘টুসি, সিনেমাটা দেখলি?
– নারে, সময় ছিল না।
– ওঃ, দারুণ একটা সিনেমা মিস্ করলি তুই। পারলে দেখিস, কি সুন্দর অভিনয় সৌমিত্র আর স্বাতীলেখার! জাস্ট অসাম।

তো সিনেমাটা দেখেনি বলে মা’র একটা আফসোস ছিলই। সেটা বাবাও জানতো। রুমি বলেছিল, ‘ মোবাইলে ইউটিউবে দেখে নিও।’ সেসময় আর হয়নি। না রুমির, না মা’র। তাই আজকে মা-বাবা’র এই প্রোগ্রাম! এবার বুঝলাম। কিন্তু না বলে যাওয়ার কারণটা কী?

বাড়ি চলে এলাম। দিদি বোনকে সব বললাম। তারপর চারটের আগেই তিনজনে হাজির হলাম ‘মুক্তা’ সিনেমা হলের সামনে। ঠিক চারটে পাঁচে শো শেষ হলো। আমরা পানের দোকানের গুমটির কাছে দাঁড়িয়ে থাকলাম। একে একে লোক বেরিয়ে আসছে হল থেকে। রুমি আমার জামা টেনে ইশারা করলো সামনে। দেখি বাবার হাত ধরে মা ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে। আমাদের দেখেই মা লজ্জায় বাবার থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নিলো। তারপর দুজনেই দুজনের দিকে তাকিয়ে চুপ করে থাকলো। আমরাও চুপ। আসলে দুজনের উপরেই আমাদের চাপা রাগ আছে। নিরবতা ভাঙলো বাবা, ‘আসলে আজ আমাদের ৪১তম বিবাহবার্ষিকী। প্রত্যেক বারই তোদের মা’কে একটা করে গিফট দিই। ও এই সিনেমাটা দেখতে পায়নি বলে আমার কাছে আফসোস করেছিল। দু’সপ্তাহ ধরে সিনেমাটা চলছে। কিন্তু সিনেমাটা দেখার জন্য আজকের এই দিনটাই বেছে নিয়েছিলাম। এটা আমার তরফ থেকে একটা গিফট বলতে পারিস। আর বিয়ের আগে বাড়িতে না বলে তোদের মা’র সঙ্গে যে কত সিনেমা দেখেছি, তা গুনে বলা যাবে না। এর একটা আলাদা মজা আছে। আজ অনেক দিন পর সেই মজাটা পেলাম। এরজন্য আমাদের ‘নকল’ ঝগড়া করতে হয়েছে। তোদের চিন্তায় ফেলেছি। জানি এটা ঠিক হয়নি। সিনেমা দেখে যতটা আনন্দ পেয়েছি, ততটাই খারাপ লাগছে তোদের কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছি বলে।’

খারাপ আমাদেরও লাগছে, এই দিনটা আমাদের কারওরই মনে নেই! বললাম, ‘ মা, সিনেমাটা তোমার ভালো লেগেছে? ‘
মা মাথা নাড়লো, ‘হ্যাঁ’।
বোন বললো, ‘ ব্যাপারটা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে, মা। এরজন্য সব ক্রেডিট কিন্তু বাবার।’
দিদি বললো, ‘ ঠিক আছে, এবার বাড়ি চলো, আমাদের ট্রিটটা এখনও বাকি আছে।’

মা-বাবা দুজনেই হেসে উঠলো।

Facebook Comments

comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

scroll to top