একটি বন্য স্বপ্নের অন্ধ যাত্রা (৪র্থ পর্ব) // নীলিম কুমার II অসমিয়া থেকে অনুবাদঃ বাসুদেব দাস

(৭)

গজেন্দ্রনাথের বিষয়ে অনেক কথা শোনা যায়। সেই শোনা কথাগুলি গজেন্দ্রনাথের সাহস এবং মহানুভবতাকেই প্রকাশ করে। সেই কথাগুলি ছিল রাহুলদের চোখের সামনের জগতটির ওপারের কথা, যেখানে রাহুলরা যেতে পারত না। একজনের মুখ থেকে অন্যের মুখে ছড়িয়ে পড়ত সেই কথাগুলি। কথাগুলির সত্যতার প্রশ্ন তোলার জন্য তখন রাহুলদের বয়সও হয়নি ।

রাহুলরা শুনেছিল বেলের নিচের চায়ের দোকানটির সামনে গজেন্দ্রনাথের ব্যবসা ছিল বিস্কুটের ভাটি এবং সোডার জলের ফ্যাক্টরি। গজেন্দ্রনাথের লবঙ্গের মতো নিশ্চয় বিখ্যাত হয়নি তার বিস্কুট। আর সোডার জল, সেগুলি ছিল কষা কষা– পেটের ভেতরে ঢুকে যেতে না চাওয়া এক ধরনের পানীয় – সে তো বিখ্যাত হওয়ার কথাই না। সেই ব্যবসা কেন ভেঙ্গে গিয়েছিল তার কারণ অজ্ঞাত। কিন্তু এখনও গজেন্দ্রনাথের পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে সোনার জলের লম্বা লম্বা সবুজ বোতলগুলি ঘোষণা করে যে ওদেরও ছিল এক উজ্জ্বল অস্তিত্ব!

সেই সোডার জলের খালি বোতলগুলি যদিও খালি ছিল সম্পূর্ণ খালি ছিল না তারা । ওদের পেটে ছিল এক একটি মার্বেল। সেই সময়কার সোডার জলের বোতলগুলিতে কোনো ছিপি থাকত না। বোতলগুলির মুখে ছিপির পরিবর্তে ছিল এক একটি মার্বেল। সোডার জলের গ্যাস মার্বেলটাকে উপরের দিকে ঠেলে বোতলের সংকীর্ণ মুখটাতে আটকে রাখত। সোডার জল খেতে চাইলে মার্বেলটাকে আঙ্গুল দিয়ে ঠেলে নিচে পাঠিয়ে দিতে  হত এবং সঙ্গে সঙ্গে গলাধঃকরণ করতে হত। তখন মার্বেলটা বোতলের নিচে পড়ে থাকে। সেই খালি বোতলটিতে যখন পুনরায় সোডার জল ভরা হয়, তখন পুনরায় মার্বেলটা বোতলের মুখে এসে ছিপির মতো আটকে থাকে। এভাবেই সেই মার্বেলগুলি এক অনন্য কর্মে চক্রবৎ ব্যস্ত থেকে অনন্য বন্দি জীবন অতিবাহিত করে ।

গজেন্দ্রনাথের সেই পরিত্যক্ত ঘরটিতে বোতলগুলির সবুজ পেটের ভেতরে মার্বেলগুলি যদিও নিরাপদ ছিল, ওরা যেন প্রকৃত জীবন থেকে বঞ্চিত ছিল। রাহুলদের ছোট্ট আঙ্গুলগুলির মধ্যে দৌড়ে গড়িয়ে খেলাধুলা করার চেয়ে ওরা বঞ্চিত হয়ে রইল। অবশ্য সেই বোতলগুলির পেটের ভেতরে ওরা একা ছিল না। ওদের সঙ্গে ছিল শূন্যতা, মুখ পর্যন্ত ভর্তি হয়ে। যাকে কেউ পান করত না।

রাহুলদর স্বচক্ষে দেখা এবং বিচরণ করা বেলের  নিচের চা দোকানটি থেকেই যদিও আরম্ভ হয়েছিল ওদের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবন আর এক সাক্ষী ছিল গজেন্দ্রনাথের পুরোনো ব্যবসায়ের–যেখানে রাহুলরা ঘুমোত। একটি বিছানা। ১২x১৩  ফুটের একটি মঞ্চের মতো ছিল সেই চাং বিছানা । শাল কাঠের ছয়টা প্রকাণ্ড খুঁটি মাটিতে পুঁতে তার উপরে সুপরি গাছ চিরে পেতে দেওয়া হয়েছিল (গোয়ালঘরের মতো)। তার ওপরে বিশাল আকারের শক্ত তোশক। তার মধ্যে টাঙানোর জন্য বিশাল একটি মশারি বানিয়ে দিয়েছিল হরেশ্বর দর্জি। নাতি নাতনিদের শুইয়ে সেই মশারিটা সুন্দর করে গুঁজে দিতেন গজেন্দ্রনাথ নিজে। আর হ‍্যারিকেনের আলোটা কমিয়ে রেখে পার্টিশন দিয়ে দু’ভাগ করা ঘরটির অন্যদিকে গজেন্দ্রনাথ  নিজে শুতে যেত।

ওদিকে তিনটা বিছানা ছিল। একটি গজেন্দ্রনাথের। একটি অমৃত প্রভার। আর অন্যটি গজেন্দ্রনাথের ছোটো মেয়ে অর্থাৎ রাহুলদের পিসির। যার নাম ছিল তরুণী।

তরুণী একটি চোখে পড়ার মতো মেয়ে ছিল। তরুণীর কীভাবে কী হয়েছিল, সে কথা আজও রহস্যের মতো লুকিয়ে আছে। একদিন খুব ধুমধামের সঙ্গে একজন যুবক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তরুনীর বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের দু এক দিন পরে বাপের বাড়িতে সেই যে তরুণী এলো, তার আর ফিরে যাওয়া হল না। তারমধ্যে দেখা দিল মৃগী রোগের লক্ষণ। হঠাৎ মুখ দিয়ে অদ্ভুত শব্দ করে সে ঘনঘন মূর্ছা যেতে লাগল। হারমোনিয়ামে রঘুপতি রাঘব গেয়ে বিকেলে  প্রার্থনা করা এবং রাতে গুনগুন করে পুরোনো অসমিয়া সিনেমার গান গাওয়া তরুণীর কণ্ঠস্বর ধীরে ধীরে লুপ্ত হয়ে গেল । ধীরে ধীরে পঙ্গু হয়ে গেল হাত দুটি । রুমাল এবং টেবিল ক্লথে ফুল এবং হরিণের ডিজাইন তোলা আঙ্গুলগুলি ধীরে ধীরে ভাঁজ নিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেল । তাকে ধরে ধরে সামান্য হাঁটানো হতো কেবল পায়খানা- প্রস্রাব করার জন্য বাড়ির পেছনের উঠোন পর্যন্ত । নিজ হাতে সে ভাত খেতে পারত না, জল খেতে পারত না, কাপড় পরতে পারত না, চুল আঁচড়াতে পারত না। তার এই সমস্ত কাজ করে দিতে হত অমৃত প্রভা এবং গজেন্দ্রনাথকে ।

থমথম ভাবে একটি চেয়ারে বসে থাকে তরুণী। স্মৃতিতে রঙ্গিন দিনগুলির কথা ভেবে ভেবে আনন্দ লাভ করার মতো তার তখন মস্তিষ্কের সুস্থতা ছিল না । মস্তিষ্কের অনুর্বরতার চিহ্ন হিসেবে তার মুখ থেকে পড়তে থাকে লালা । সেই লালা মুছে দেবার জন্য একটি ছোটো কাপড়  তার কাঁধে পেতে রাখা থাকে। লালা মুছে দেওয়া কাজটা প্রত্যেকেই করাটা একটা অঘোষিত নিয়মের মতো ছিল। আসা যাওয়ার পথে তাই রাহুল এবং তার দিদি নীপাকে মুছে দিতে হতো সেই রংহীন লালা।

লম্বা হাতের পুরু কাপড়ের একটা ব্লাউজ এবং রশি থাকা একটি সাদা গাউন তরুণীকে পরিয়ে রাখা হত। পেটিকোট না বলে তাকে গাউন এজন্যই বলা হতো যে তা সেলাই করেছিল হরেশ্বর দর্জি। জীবনে হরেশ্বর দর্জি কারো পেটিকোট এমনকি নিজের স্ত্রীরও সেলাই করেনি বলে শোনা যায়। তরুনীর জন্য যে পেটিকোট সে সেলাই করেছিল, তাকে সে ‘গাউন’ বলত। কারণ হরেশ্বর দর্জি বড়ো দর্জি। টাউন কমিটির মিটিংয়েও তাকে ডাকা হত। সে বিখ্যাত ছিল তার কূটবুদ্ধির জন্য, যা মিটিংয়ের সভাপতিকে বেকায়দায় ফেলতো। গজেন্দ্রনাথের প্রতি হরেশ্বর দর্জির ছিল এক অকারণ হিংসা। কিন্তু তিনি যে তরুনীর প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন, তার প্রমাণ তরুণীর গাউনগুলিই।

সেই সাদা গাউনগুলি মাঝেমধ্যে রক্তে ভিজে যায়, তরুণীর যখন ঋতুস্রাব হয়। ঋতুস্রাবের দুদিন অমৃত প্রভার তরুণীর কাপড় বদলে বদলে অবসর থাকে না। কখনও কখনও তরুণীর স্বামী মদন, যে দ্বিতীয় বিবাহ করে তিনটি ছেলে মেয়ের জন্ম দিয়েছে। সেও দেখতে পায় তরুনীর ঋতুস্রাব। ওহো! মদন কিছু না ভেবে– দুপুরের ভাত খেয়ে শ্বশুর গজেন্দ্রনাথ এবং শাশুড়ি অমৃত প্রভার পা ছুঁয়ে চলে যায়। মদন জানে না, গজেন্দ্রনাথ এবং অমৃত প্রভার কত বেদনার কণিকা থাকে সেই ঋতুস্রাবে। সাবান জলে সেই রক্তের দাগ মোছা যায় না। অমৃত প্রভা সবার অজান্তে চোখের জলে ধুয়ে রোদে মেলে দেয় হরেশ্বর দর্জির করুণতায় নির্মিত তরুণীর সেই গাউনগুলি।

(৮)

‘গার্ডিনেল ৩০’ নামের টেবলেটগুলি তরুণীর স্নায়ুতন্ত্রের অপ্রাকৃ্তিক আচরণের সামনে অসহায় হয়ে পড়েছিল। ডাক্তারেরও ডাক্তার উমেশ ডাক্তার এমবিবিএস দুরারোগ্য বলে বলা তরুণীর এই অসুখকে অনেকে ‘কেউ ঔষধ করা বলেছিল। শক্তিশালী গজেন্দ্রনাথ কখনও দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং যে যা উপদেশ দিত অমৃত প্রভার মুখের দিকে তাকিয়ে করে যেত। ফুলের মতো কোমল মেয়েকে চোখের সামনে এভাবে তিল তিল করে একটা কঙ্কালে রূপান্তরিত হওয়াটা গজেন্দ্রনাথ সহ্য করতে পারত না।

দূর দূরান্ত থেকে চিকিৎসক কবিরাজরা আসতেন। নাটক-অভিনয় করতেন। নাটক দেখে বেলের নিচের চায়ের দোকানের পয়সা রাখা বাক্সটা থেকে লবঙ্গ বিক্রি করা পয়সা বের করে দিত গজেন্দ্রনাথ। গজেন্দ্রনাথ নিজেই একজন আধ্যাত্মিক পুরুষ ছিলেন। তাই তাঁর সামনে সেই চিকিৎসক এবং কবিরাজরা হীনমন্যতায় ভুগত-গজেন্দ্রনাথের হাত থেকে পয়সা নিতে তাদের কষ্ট হত। কিন্তু গজেন্দ্রনাথ তাদের হাতে জোর করে গুঁজে দিত নাটক করার সম্মানী । কেন না, জীবন সংগ্রাম কী জিনিস তা গজেন্দ্রনাথ ভাল করেই জানত।

একবার একটি অপরিষ্কার কালো কোট এবং লুঙ্গি পরে একজন বৈদ্য এসেছিল । তিনি গজেন্দ্রনাথের সামনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন–তরুণীকে ভালো করে তুলবেন। তিনি বলেছিলেন তার থলের ভেতরে একটি জিন আছে। সেই জিনের সাহায্যে তরুণীর কঙ্কালটা আগের তরুণী হয়ে উঠবে। জিন বলেছিল তরুণীর ডান হাটুর নিচ থেকে কাঁচা মাংস কেটে নিয়ে ঘা করার জন্য। তারপরে সেই ঘায়ের ওপরে অদ্ভুত রঙের কিছু ঔষধের গুড়ো যা তার কাঁচা ঘা থেকে নির্গত রক্তের শিরায় উজিয়ে গিয়ে তার সমস্ত রক্তে বিলীন হয়ে যাবে।…

অমৃত প্রভা বারবার এই নির্মম চিকিৎসা বন্ধ করার জন্য বলেছিল। গজেন্দ্রনাথকে উদ্দেশ্য করে অমৃত প্রভা বলেছিল –’আমি মা রয়েছি না, আমি ওকে দেখব। তার জন্য অন্যদের এত ব্যাগ্র হতে হবে না। ও হো,চোখের সামনে ওর শরীর থেকে মাংস কেটে নিতে আমি দেখতে পারব না। শুনছেন, বেজের এসব কাণ্ডকারখানা বন্ধ করুন।’ গজেন্দ্রনাথের পিতৃহৃদয় সেদিন অমৃত প্রভার কান্নায় নয়, কালো কোট আর লুঙ্গি পরা মানুষটার হাতে পরাজিত হয়ে গেল।

একটা ধারালো ছুরি দিয়ে মুসলমান বেজ তরুণীর ডান হাটুর নিচের মাংসল জায়গাটায় তখনই একটা গোলাকার আঁচ টেনে দিল– রক্তের একটি বৃত্ত সৃষ্টি হল । এটা করার জন্য তরুণীকে তার চেয়ারে হাতে পায়ে বেঁধে নেওয়া হয়েছিল। সে কিছুই করতে পারল না। কেবল চিৎকার করে উঠল–কী ভীষণ আর্তনাদ! সেই আর্তনাদের বাতাসে কেঁপে কেঁপে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল গজেন্দ্রনাথ। তরুণীর সেই চিৎকার সেদিন ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে নিঃস্ব, সবচেয়ে করুণাগ্রস্ত নারীর আর্তনাদ– মানুষের বর্বরতার বিরুদ্ধে! অমৃত প্রভা হাউমাউ করে কাঁদছিল। রাহুলদের সেই দৃশ্য দেখতে দেওয়া হয়নি। ওদের তরুণীর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওরা ঠাকুর ঘর থেকে বাঁশের ধাড়ির বেড়ার ফাঁক দিয়ে সেই অমানুষিক দৃশ্য দেখে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে উঠেছিল। শালগ্রাম তখন শুয়েছিল। কৃষ্ণ রাধা এবং গনেশরা ছিল লেপের নিচে মৌন, অনুকম্পাহীন!

কমলালেবুর খোসার মতো এক খাবলা গোলাকার  মাংস টেনে বের করে এনেছিল সেই কালো কোট পরা বেজ। তার নির্দয় মুখে ফুটে উঠেছিল কৃতকার্যতার অভিব্যক্তি। আর তরুণী, তার প্রায় মূর্ছা যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। অমৃত প্রভা দৌড়ে এসে গজেন্দ্রনাথের পা দুটি খামচে ধরে বলেছিল–’ আপনি বাবা হয়ে কীভাবে তাকিয়ে দেখছেন এই দৃশ্য। আর চাই না। বন্ধ করুন। তার চেয়ে ওকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলুন। ওর এই কষ্ট আমি দেখতে পারছি না। জীবন্ত অবস্থায় শরীরের মাংস কেটে নিচ্ছে, কী নির্মম এই বেজরা– মানুষ নয়।…’

গজেন্দ্রনাথেরও চোখ থেকে টপ টপ করে জল খসে পড়ছিল। সেই চোখের জলের মধ্য দিয়ে গজেন্দ্রনাথ তরুণীর ভয়বিহ্বল মুখটিতে অসহায়তার যে প্রকাশ দেখেছিল, তৎক্ষণাৎ  গজেন্দ্রনাথ তার সিদ্ধান্ত বদলে নিয়েছিল। গজেন্দ্রনাথ বেজের কাছে গিয়ে বলল–’ হবে, আর লাগবে না। ওকে ভাল হতে হবে না। এভাবেই থাকুক। ওর এত কষ্ট আমি দেখতে পারছি না।’

কালো কোট পরা বেজের থলের ভেতরে থাকা জিনের নির্দেশে তরুণীর হাটুর নিচে যে ঘা হয়েছিল, সেই ঘা শুকোতে ছয় মাসেরও বেশি সময় লেগেছিল। ডাক্তারেরও ডাক্তার এসে সাদা কাগজে পেনিসিলিন ইনজেকশন লিখে দিয়েছিল। আর শান্তি নামের বাঙালি নার্সটি , যে স্টেট ডিসপেন্সারিতে কাজ করত, সে প্রতিদিন এসে পেনিসিলিনের বোতলে ডিস্টিল ওয়াটার মিশ্রিত করে বোতলটা নাড়াতে নাড়াতে রাহুল নীপাদের এভাবে দেখত যে সেই চাহনিতে লেখা ছিল–’ বদমাসি করিস না, না হলে…’

রাহুলরা কিছুটা দূরে সরে গিয়ে ঠাকুর ঘরের বারান্দায় উঠত, শালগ্রামের কিছুটা কাছে চলে যেত। এই ধরনের বিপদে শালগ্রাম শিলাই ছিল তাদের একমাত্র সম্বল!

শান্তি নামের যে নার্সটি তরুণীকে ইনজেকশন দেওয়ার জন্য এসেছিল, তাকে দেখতে সবসময় আট মাসের গর্ভবতী মহিলার মতো মনে হত। হাত-পা, মুখটা আর মস্ত একটা পেট নিয়ে তাকে সবাই গর্ভবতী বলে ভুল করত। কিন্তু পরবর্তীকালে সে কথা বজালীর প্রায় প্রতিটি মানুষই জানতে পেরেছিল যারা তার ইনজেকশনের খোঁচা খেয়েছিল আর যাদের ঘায়ে  আয়োডিন আর তুলো লাগিয়ে সে ব্যান্ডেজ বেঁধে  দিয়েছিল। রাহুলের কপালের যে দাগটা এখনও পাসপোর্ট সাইজের ফোটোতে জ্বলজ্বল করে, যে দাগ আজও ব্যবহৃত হয় রাহুলের আইডেন্টিফিকেশন মার্ক হিসাবে, সেই ঘায়ের  টুকরোতেও শান্তির হাতের স্পর্শ ছিল। রাহুলদের বাড়ির অতীতের অনেক ঘায়ের সঙ্গে পরিচিত ছিল শান্তি নামের সেই বিধবা নার্সটি।

একটি বন্য স্বপ্নের অন্ধ যাত্রা ( ৩য় পর্ব) // নীলিম কুমার II অসমিয়া থেকে অনুবাদঃ বাসুদেব দাস

Facebook Comments

comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

scroll to top