১
আমি একটা দেয়াল তুলে দিই,
অন্য দেয়ালটা পেরোব বলে।
জম্ম-মৃত্যুর এই ব্যবধান ঘুচে গ্যালে
কতিপয় ষাঁড়ের মাথায় লালনিশানা;
তারপর অনন্ত ছুটে চলা…
২
ক্লেশের প্রবৃত্তি রোধ করে বেরিয়ে যাই বোধিবৃক্ষ তলায়
আকাশের ঘনঘটা পেরিয়ে যখনি দাঁড়াই,
যখনি বৈকল্পিক চিন্তাভাবনা রোধ করে দিই
চক্রাকারে ঘুরতে থাকা ঘাসের ডগার শিশিরকণার মতোন,
তখনি পালিয়ে যায়-
আমার ভেতরে দানব হয়ে থাকা জীবন।
৩
এ তালিম শ্যাষে
নতুনের পসরায় আলো আসে
উচ্ছন্নতায় ভাসছে অন্ধকার
৪
আমি গল্পই লিখি আদতে
কবিতার মোড়ক তো বিভ্রম মাত্র
এইসবের মাঝে মাথার উপর একটা দাঁড়কাক উড়ে যায়:
বন্দুক হাতে উঠেপড়ে লাগি যুদ্ধের দামামায়
৫
ঘুমে ঘুমে স্বপ্ন দেখি চিরঘুমের।
জাফরান-রাঙা আলোতে আমি ধৌত হচ্ছি।
আমার শরীর থেকে ঘোষিত হচ্ছে শব্দের পবিত্রতা।
পাখিদের সমাবেশে অতিথি হয়ে এসেছে সী-মোরগ:
বলো, হে অন্ধকারের অধিবাসীগণ-
শালবনবিহারের সিনায় টান দিয়েছে কে!
৬
চোখের পানিতে সাফ হয়ে যায় দিলের ময়লা।
মজনুর চোখ নেই বলে চিনতে পারি না লাইলিকে
এ কেমন বিচার, বলি হে খোদা-
সমুদ্র খুঁজে পেলাম না বলে কুয়ার ভেতর পেতেছি শয্যা
৭
আমি বরং জন্মকে সযতনে এড়াতে চেয়েছি।
সৃষ্টির আনন্দ ভুলে থাকি;
মৃত্যুর মতোন ঋজু হতে পারি না বলে।
৮
প্রতিটা সফল প্রেমে আমার যবনিকা ঘটে।
আবার জন্ম নিই ভোরের আজানের মতোন;
পবিত্র ও অন্ধকার রাতের শুদ্ধতা নিয়ে।
৯
অবহেলা আমাকে নিয়ে গেছে তোমার আরও কাছে
দুধের সরের মতোন মুখে লেগে থাকা অমৃত-
আমি আকন্ঠ ডুবতে পারি
তোমার বিধ্বস্ত শরীরে: আমার কথা ভাবো,
নূহ নবীর প্লাবন তো থেমে গেছে।
১০
যে জীবন হাওয়াই উড়ানোর
যে ক্ষণ অস্তিত্বের করোটিতে জমা হত,
তা হারিয়ে গ্যাছে ।
এখন শুধুই নি:স্তব্দতা আর জেগে আছে
নৈ:শব্দের কোলাহল।
১১
মৃত্যু এসে কড়া নেড়ে যায় বেহায়ার মতো
ষোড়শী চঞ্চলার এত তাড়া;
ঈশ্বর, আমাদের ক্ষমা করো।
১২
জীবন;
প্রেক্ষাগৃহে চলতে থাকা ছায়াছবির মতোন
ছবি দেখে শেষ করার ধৈর্য্য আমাদের নেই,
তাতে পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবির কি আসে যায়!
১৩
সাধুর বাজারে, সর্বজনার মেহফিলে
তোমায় চেয়েছি নিবিড় করে।
মিলেছ কোথায় তুমি,
হে সখী,
কার হ্নদয় পারঙ্গম করে ?
১৪
দু:খগুলো, আমায় ছুঁয়ে যাও
আরও ক্ষত করে, আরও গভীরে
নাভীমূল ছিড়ে অথৈ সাগরে