✿
টিকটিকি
দেয়ালে টিকটিকি
তার তরতাজা লেজ টুপ করে খসে পড়লো
শুনশান মেঝেয়
অথচ আমি টেবিলে
আর দেয়ালের দিকে তাকাবার মতো সময়
নেই
কিন্তু টিকটিকির ঐ লেজ
খসে পড়া তরতাজা লেজ
ও তো আমাকে দেখছে
ও তো আমাকেই দেখছে
——–
✿
গল্প লেখেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
গল্প লেখেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
ট্রেনে পাবনা যাবো তাই টিকেট কাটলাম আমার জন্য
আর মানিক বাবুর জন্য
চেনেন তো মানিক বাবুকে ঐ যে উনি গল্প লেখেন
গল্প লেখেন আর মদ খান
মদ খান আর গল্প লেখেন
লেখক তো পয়সাটয়সা তেমন নেই
তাই সস্তার মদ খান
এমন কি চোলায়ও খান ডোমচন্ডালদের সাঙাৎ করে
তো
ওনার মতো মানি লোক
গল্প লেখেন
মদ খান
গল্প লেখেন আর মদ খান আর মাতাল হন
আচ্ছা জগতের সব মাতালই কি গল্প লেখেন
না
কিন্তু সব মাতালেরই তো গল্প আছে
আছে তো
তাহলে কেবল মানিক বাবুর গল্প লেখাটা বিশেষ কিছু না
———
✿
পুণ্যিপুকুর নাইনথ ডাইমেনশন
আমার দশ বছরের মেয়ে মান্যিগন্যি করে না আমাকে
মায়ের কথা মানে অক্ষরে অক্ষরে
নেংটি ইঁদুরগুলোর জন্য দুশ্চিন্তা
উড়োমেঘ রাতের সবজিক্ষেত, কালাপাহাড় ধলাপাহাড়।
চূড়ান্ত অপদার্থতার নিদর্শনস্বরুপ আমি বয়কট করছি
বিদ্যাসাগর স্মরণোৎসব, ভোটভোট গণতন্ত্র কোরিয়োগ্রাফি।
ডিকশোনারি কি আমাকে ভাষা শেখাবে ?
সে বলে দেবে শব্দের কুলঠিকুজি ব্রহ্মদিশা অপরিকল্পিত সোমবার ?
রাইফেল বা ধর্মগ্রন্থ কেউই পারছে না টেবিলের নিচটা উপুড় করে দিতে
গনগনে সূর্যের সামনে যেখানে আবার একাধীক স্বৈরশাসকের
মূর্তিও রয়েছে যারা কেউ শিশুদের নিরাপত্তা দেয় না
কেউ জানতে চায় না আমার কবিতার কিছু বলার আছে কি না।
মা খায় না, আমি আর মেয়ে কাঁচামিঠে আম খেয়ে
সশস্ত্র বিপ্লবে দীক্ষা নিই। মেয়েকে ফুসলোই, পারবি
তোর ঐ সুন্দরী বাংলা আপার নাকে
চিমটি দিতে ? (সিক্যুরিটি আর টাওয়েল পাবিনে।)
মুরগির কাঁচা ডিম দ্যাখ এইভাবে ভেঙে এই ভাবে
পারফেক্ট ইমোশন এ্যাপিল, মানবপ্রদাহ অনুভব ছাড়াই
এক ঢোকে গিলে ফেলতে হয়। মনে রাখবি আমাদের এই উপসাগরে
কোন অনকূল বাতাসে তোর অগোচরে কতো জাহাজ এসেছে ফিরেও গেছে।
যখন আরও বড় হবি, সূর্যাস্তের অতিন্দ্রীয় কাঁটাঝোঁপ
মাইরি বলছি অন্তোষ্টিক্রিয়ায়
তোর ঐ দুখী দুখী মুখ
যা দেখতে একখান !
———
✿
রেনোয়া
ক্লদ মনের বউ শুয়ে শুয়ে সুখী সুখী নিমগ্নতায়
বই পড়ছে
এরকম একটা ব্রাইট এ্যান্ড কালারফুল অয়েল পেইনটিং
তুমি এঁকেছো
কেন আঁকলে
ওর প্রাইভেসি আর সোশাল এ্যাপিলের বিষয়টা মাথায় নিলে না
না কি কামিই
তোমার বন্ধুর বউ
এটা চেয়েছে
তুমি কি ভালোবাসো ওকে
তুমি কি দেখেছো ওর সান ওর ইম্প্রেশান
এখন
শুয়ে শুয়ে ও বই পড়ছে
বই পড়ছে
আমি ওকে পড়ছি
হ্যা
আমি ওকে পড়ছি
আর আমার টেবিল আর আমার বইয়ের তাক
চায়ছে আমাকে পিষে ফেলতে
——–
✿
এটাই
এটাই তো ঠিক যে মায়ের গর্ভ থেকে টেনে বের করে এনে
একটা কঙ্কালের ভেতর আমাদের ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে
যেখানে কম্পিউটার আছে দর্জিঘর আছে
আর এতো বড় বড় হাসপাতাল
যে ৫/৭টা সূর্যকে অনায়াসে মেঝেতে গড়িয়ে
টেনে এমাথা-ওমাথা করা যেতে পারে
আমাদের আত্মার সামনে
যা আমাদের সঙ্গে সঙ্গে মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছে
এর পরের কাজটা তো ডোম আর ডাক্তাররা মিলে করে দেয়