পাখি ও অরণ্যের গান//কাজী লাবণ্য

বাবাকে একটি চতুর্ভূজের মাঝখানে রেখে এপাশ ওপাশ দিয়ে সাবধানে শলার কাঠি চালাতে চালাতে শালিক একদম ওর মায়ের কন্ঠে বলে ওঠে-
-আব্বা! মা ঠিকি কয়, আসলেই তুমি বড্ড আলসিয়া মানুষ সুযোগ পাইলেই সুতি থাকো। আর শুতি না থাকি এবারে ওঠতো। কামকাজ কি আছে কর, গা ধোও, ঝাড়ু দেওয়া হইলে আমি গা ধোব। ওর আব্বা হেসে ফেলে, বলে-
-তোর মাও তো কতকিচুই কয়, কউক, তুই দড়ির ঐ কাপড়টা এনা সরায় দেতো মাথাটায় রইদ পড়েছে, বেশি রইদ পড়লে ফির মাথা বিষ করবে এলা। জাড়কালীন এই মিটা রইদে শুতি থাকার মতোন আরাম আর কিসে আচে, কও?
শীতের দিনে আঙিনায় পাটি বিছিয়ে রোদে শোয়া শালিকের আব্বার বড় ভালো লাগার বিষয়। মাথার দিকে থাকবে ছায়া আবার সারা শরীরে যেন রোদ লাগে, কিন্তু সেটা কি আর সম্ভব হয়? পাড়ার বড় বাড়িতে সে বছরভরা মুনিষ, খাটাখাটনি করে দিন গুজরান করে। শীতের রোদে শুয়ে থাকার বিলাসিতা ওর কপালে নাই। আজকের কথা আলাদা। আজ ছুটি নিয়েছে । আজ ওদের একটা বিশেষ দিন। সকাল থেকে বাড়িতে সাজ সাজ পড়েছে, একেবারে ঈদের দিনের মতো। শালিকের মা ময়নার গোসল করাচ্ছে কলপাড়ে। দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে সবাই মিলে আজ ওরা পানিয়ালপুকুরের মণ্ডলবাড়ি যাবে। শালিক মায়ের বলে দেয়া কাজগুলি দ্রুত হাতে গুছাচ্ছে। কাজ করতে ওর ভালোলাগে না কিন্তু মায়ের হাতের মাইরের চেয়ে কাজ করা ভালো।
শালিকের আব্বা বাচ্চাদেরকে মারধোর করে না। বউকেও অনুরোধ করে-
-আমার মাইয়াদের মাইরো না, ওদের আমি ভালোমন্দ খাইতে পরতে দিতে পারি না, আর তুমি ওদের মারো, এ আমার সইহ্য হয়  না, তোমার আল্লাহ্‌র দোহাই লাগে ওদের তুমি মাইরো না টিয়ার মাও…এসব দোহাই শুনে অভ্যস্থ শালিকের মা, শেষের সম্ভাষণ শুনে বরাবরের মতো চমকে ওঠে! পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে ভেংচে ওঠে-
-না, মাইরবে না! অরা যে বাদশাজাদি! ওদের যে দাসীবাঁদী আচে গণ্ডাগণ্ডায়, আর কোর্মা পোলাও, গোস্ত মাছে ভরা হাড়ি কড়াই… শালিকের আব্বা আর কিছু বলে না। চুপ হয়ে যায়। সে শালিকের মায়ের দুঃখ বোঝে, তার বুকের জ্বলুনি অনুভব করতে পারে কিন্তু কি করবে!
আচমকা, আঙিনার কোণায় মুরগিটা অস্থির কন্ঠে কক কক করে ওঠে। ওদের বাড়িতে ঘোরাঘুরি করে যে কুকুরটা সেও ঘেউঘেউ করে ওঠে।
-শালিক, দেখত মা চিলা আইছে বুঝি! এক কাম কর পলুইটা দিয়া ঢাকি থো। বাচ্চাসহ মুরগিটা লম্বা পলুইর নিচে বন্দী থাকে বেশিরভাগ সময়। কেবল সবাই যখন বাড়িতে থাকে তখন ছেড়ে দেওয়া হয়। বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ওরা খুঁটে খুঁটে খায় আর চিঁচিঁ করে সারা আঙিনা ঘুরে বেড়ায়। চিলের যন্ত্রণায় হাঁস মুরগি পোষা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবু লোম ওঠা অভাগা কুকুর ভুট্টু আছে বলে কিছুটা রেহাই। সে মা মুরগিসহ বাচ্চাগুলিকে পাহারা দেয়। সাথে এই বাড়ি আর মানুষগুলোকেও নিজ পাহারায় রাখে।
-না আব্বা, চিলাটা হামার মুরগির সাথে পারে না। শালিক হাসতে হাসতে বলতে থাকে, অয় ছোঁ দিবার আগেই মুরগিটা দুইপাশের ডানা দিয়া বাচ্চাগুলাক শক্ত করি ঢাকি ধরে। চিলার বাপের সাদ্যি নাই বাচ্চা নিবার, মুরগিটার খুব শক্তি আব্বা। শালিকের কথা শুনে ওর আব্বা উড়োজাহাজের মত দুপাশে ডানা ছড়ানো মুরগিটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। মুরগিটার খুব শক্তি নাকি সাহস! কোনটা! সে ভাবতে থাকে। আমার কি শক্তি, সাহস কোনটাই নাই! একটা মুরগি নিজ বাচ্চাদের ডানার নিচে আঁকড়ে ধরি থাকির পারে, আর আমি! আমি আমার সোনাপাখিকে বুকে ধরি থুবার পারি নাই! বউয়ের নিঃশব্দ অভিযোগ সবসময় আঙুল উঁচিয়ে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তার বুকের ভেতরটা তোলপাড় করে।

হিহি করে কাঁপতে থাকা, নীল হয়ে যাওয়া ঠোঁটের ভেজা ময়নাকে দুইহাতে তুলে ধরে ওর মা নিয়ে আসে।
-শালিক! ময়নার পিরান আর ত্যালের শিশিটা আন। শালিক এক দৌড়ে ঘর থেকে ছোটবোনের সব কিছু নিয়ে আসে। গাওত ত্যাল মালিশ করি পিরানটা পেন্দে দেও, আমি গা ধুইয়্যা আসি। শালিকের আব্বার উদ্দ্যেশে কথাগুলো বলে, ভেজা শাড়ির পাড় ঠেলে দ্রুত পায়ে শালিকের মা কলপাড়ে চলে যায়।
শালিক আর ওর আব্বা মিলে ময়নাকে সাজায়। কাপড় পরায়, চুল আঁচড়ে সিঁথি করে দেয়। শালিক একটা রঙিন ক্লিপ চুলে আঁটকে দিয়ে মুগ্ধ চোখে বোনকে দেখে
-আব্বা, দেখ, দেখ ময়নাকে কি সোন্দর দেকাচ্চে! তাইনা আব্বা!
-হ, মা খুবি সোন্দর। আচ্চা আব্বা, হামার বড় বুবু কি…
-তোর মায়ের গোসল হইলে তুই যা মা। তোর হইলে আমি এলা করব। শালিককে থামিয়ে দিয়ে হড়বড় করে বলে ওঠে শালিকের আব্বা।
পৌষ মাস, জাড়ের বেলা রণপায়ে দৌড়ায়। আকাশে নীলের উপর হালকা সাদা মেঘের পায়চারী। রোদের কোন তেজ নাই, মরা। রোদ তো না যেন চাঁদের হুরপরি জ্যোৎস্না। শিকার না পেয়ে ক্লান্ত চিল পরাজয় মেনে ফিরে গেছে নিজ ঠিকানায়।
ওরা সবাই সুন্দর করে সেজেছে। শালিক তুলে রাখা জামাটা পরেছে, ওর মা গত ঈদে বড়বাড়ি থেকে পাওয়া ফুলতোলা ছাপা শাড়িটা পরেছে, চুলে তেল দিয়ে হাতখোঁপা করে গায়ে একটা শাল জড়িয়ে নিয়েছে। ময়না ওর আব্বার কোলে। সবার আগে শালিক।মা ধমক দেয়-
-শালিক, খবরদার ঝাপাঝাপি করিস না। ভদ্দর হয়া থাকিস। আজ কয়েকদিন ধরে কতরকম আলোচনা, শতরকম ভদ্রতার কথা ওরা নিজেরা বলাবলি করছে। শালিকের জন্য উপদেশের শেষ নাই। খেতে বসেও হাজারটা উপদেশ। দুপুরে আজ নাপাশাকের ঝোল, আর আলুর ভর্তা ছিল। খাবার আগে আগে কি মনে করে শালিকের মা ঘরের মুরগির জমানো ডিম থেকে দুইটা ডিম ভেজে নিয়ে এসে সবার থালায় ভাগ করে দেয়, নিজেও এক টুকরা নেয়। ওর মায়ের মন খুশি থাকলে ডিম ভাজে, তা নাহলে ডিম বিক্রি করে শালিকের স্কুলের খাতা পেন্সিল কিনে দেয়।
অবশ্য এবারে এই ‘খবর’ পাওয়ার পর থেকে ডিম জমানো হচ্ছে। মুরগি রাখা হয়েছে। দুকেজি সুগন্ধি শাল্লি চাল যোগাড় করে রেখেছে। কিছু পয়সাকড়ি জমিয়েছে একটা জামা কেনার জন্য। যেনতেন জামা না। এই দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর একটা জামা। শালিকের মায়ের কাছে হাতের তালুর সমান একটা ময়ুরের পালক আছে, কোরান শরীফের ভেতরে রাখা। চোখের সামনে ঐ পালকের মত একটা জামার ছবি আবছায়া ঝিলমিল করে। অমন একটা জামা কিনতে কত টাকা লাগে! লাগুক, যত লাগে লাগুক। ভাবে, বাকি হাঁসগুলিও বেইচ্যা দিবে, দরকার হইলে পোষা বকরিটাও যাইবে তাও একটা ময়ুরি জামা চাইই চাই।
সবার খাওয়া শেষে এঁটোকাঁটার সাথে কিছু ভাত মিলিয়ে কুকুরটাকে খেতে দেয় শালিকের মা। নিয়মিত নিজেদেরই পেট ভরে না, তবু কুকুরটাকে কিছু না কিছু দেয়। সেও কোন অবস্থাতেই এদেরকে ছেড়ে কোথাও যায় না।
বেলা পড়ে আসছে। জমির মাঝখান দিয়ে আইলের উপর দিয়ে হাঁটছে ওরা। দুপাশে অবারিত হলুদ সরিষা ক্ষেত। গ্রামের মাঠে মাঠে প্রকৃতি বিছিয়েছে হলুদ গালিচা। যেদিকেই চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। প্রকৃতির নির্মল বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে সরিষা ফুলের মাতাল করা ঘ্রাণ।

সবার আগে শালিক। সবার পেছনে ভুট্টু। শালিক তো হাঁটে না লাফায়। সাথে তার ঝাঁকড়া কোঁকড়া চুলগুলিও লাফায় মাঝে মাঝে আবার পেছনে এসে ময়নাকে কোলে নিয়ে কিছুদূর যায়। ময়নার সাথে নানা খেলা করে আর ময়না খিলখিল করে হাসে। কেবল ময়না না, ময়নার মাও হাসিমুখেই পথ চলে।
-মা শালিক, মনে আচে তো যা যা শিকি দিছি।
-হ আব্বা, সউগ মনে আছে। অত চিন্তা কইরোনা তো। হামারে তো বুবু, এক্কেরে নিজের বুবু-
-আহ! কইছি না। বুবু না আপু!
-আচ্চা আচ্চা, আপু! আপু! আরো কতক্ষণ হাঁটার পরে শালিকের আব্বা আঙুল তুলে বলে-
-অই যে হইলদ্যা দেওয়াল ঘেরা বাড়িটা দেখা যাওছে। ওই বাড়িটাই মণ্ডলবাড়ি। শোনামাত্র শালিকের মা দাঁড়িয়ে পড়ে। তাকিয়ে থাকে হলুদ দেয়ালের দিকে। কিন্তু হলুদ কোথায়! মিশমিশে কালো আর আকালের বরাভয় নিয়ে আসমান জমিনে দাঁড়িয়ে আছে এক দেয়াল, তাতে মঙ্গা আর শিশু মুখের ঝাপসা ছবি। আকাল ওদের বারোমাস, কিন্তু সেই বছরের আকাল যেন জন্মের সব আকালকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। প্রস্তাবটি এসেছিল বিপুল বিস্ময় হয়ে। অবিশ্বাসের অনুভূতি, বিচ্ছেদের যন্ত্রণা নাকি আকালের তাড়না কোনটি যে তীব্র ছিল সে আর বলতে পারে না। পা যেন মাটির সাথে, ঘাসের সাথে খুটপোঁতা হয়ে যায়। তুলতে গেলে মনে হয় একপা তুললে আরেক পা চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছে। নাড়িছেঁড়া পাখিটাকে দেখার অনন্ত পিপাসায় তাঁর অন্তর হাহাকার করে ওঠে। পৌষের সন্ধ্যা হুড়মুড়িয়ে নেমে আসে তার সবটুকু হিম নিয়ে। গায়ের চাদরটা ভালো করে পেঁচিয়ে নিয়ে ওরা এগুতে থাকে…

(২)
ঘন কুয়াশা। চারহাত দূরের কিছু দেখা যায় না। শালিকদের ছোট্ট দলটা আইলের উপর দিয়ে ফিরছে। কিছুক্ষণ আগের চেনা আইল, পা পড়ে সাবলীলভাবে, ভেজা শিশিরে কেউ পিছলে যায়  না। কারো মুখে কোন কথা নাই। এমন কি শালিকও চুপ। ঘুমন্ত ময়না বাপের কাঁধে নিশ্চিন্ত ঘুমে অচেতন। মুখ ফাঁক করলেই ধোঁয়া বের হয়। নাকের নিশ্বাসেও তাই। ধোঁয়ার ভয়েই বুঝি কেউ মুখ খোলে না। শালিকের মা চোখেও দেখতে পায়  না, না পাওয়ার কারণ কেবল কুয়াশা নয়। বুকের ভেতরে নদীর পাড় ভাঙে নিঃশব্দে। মাথার ভেতর বায়োস্কোপের ছবির মত দোল খায় হাসি হাসি একটি অবয়ব।

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসাবাসির প্রথম ফুল টিয়া। টিয়ার পর শালিক এর বহু পরে ময়না। টিয়া উড়ে গেছে অন্য ডালে। সে কুন্তির সন্তান কর্ণ না হয়েও হাওয়ায় ভেসে গেছে। তার নামও আজ আর টিয়া নয়। অন্য কিছু। সময়ের সাথে দূরত্ব বাড়তে বাড়তে টিয়া আজ কেবলই এক খসে যাওয়া পালক। মণ্ডলবাড়ির মেজো কন্যা বিদেশে থাকে। তারা রাজা বাদশার চেয়েও বড়লোক। তাদের সব আছে, কেবল বাবা-মা বলে ডাকার কেউ নাই। ঐ জায়গাটা শূণ্য, সেই শূন্যস্থান পুরণের জন্য আট বছর আগে তিন বছরের টিয়াকে ওরা বুকে তুলে নিয়ে উড়ে গেছে। তখন শালিকের বয়স দুই বছর। আর শালিকের মায়ের পেটে আরেকটা বড় হচ্ছিল, সে অবশ্য জন্মের পর জগতের আলো দেখেনি।
তখন ওদের কি সুন্দর দিন ছিল!
তখন ওদের ডালে পাখি ছিল!
তখন ওদের চালে লাউলতা আর শিমফুল গলাগলি করে ছিল!
তখন একটা সাদাকালো হুলো ছিল, পিঠাপিঠি কান্না ছিল, হলুদ সরিষাখেত জুড়ে বথুয়া শাক ছিল…

বলতে গেলে ওরা টিয়াকে দেখতে দেয়নি। সে নাকি জেটল্যাগে টায়ার্ড। ওরা বেরুতে দেয়নি। অবশ্য মণ্ডলসাহেব খুব খাতির করেছে। বারান্দায় বসিয়ে অনেক খাবার দাবার দিয়েছে। নিজে তদারক করেছে।
একসময়, শালিকের আব্বা কেশে গলা পরিষ্কার করে আবেদন করেছিল-
-একদিন আসি ছাওয়াটাক এনা বাড়িত নিয়া যাইতে চাই…
-নিয়া যাইতে চাস, বেশ তো, ভালো কথা, নিয়া যাবি। তয় কথা হচ্ছে ওরা বিদেশী মানুষ, এই আমাগোর দ্যাশের খাবার বাতাস সহ্য হইবে কি! তুই তো অবুঝ নস। তুই তো সব বুঝিস, কি দরকার! তাছাড়া ও যদি কিছু বুঝবার পায়, সেটা ওর জন্য খুব খারাপ হইবে, তোদের জন্য খারাপ হইবে, আমাদের সকলের জন্য খারাপ হইবে। ঠিক কিনা তুই কও! তোরও তো একটা বিবেচনা আছে, আছে না!
এইসব বলে টলে হাতের মুঠায় কিছু গুজে দিয়ে উঠে দাঁড়ায়, আইজ আর দেখা হইলো না, আমি না হয় আরেকদিন খবর দেব…

ঠিক সেই মুহূর্তে ছেলেদের মত শার্ট প্যান্ট পরা ঝাঁকড়া কোঁকড়া চুলের একটা পরী একটা বড়সড় চওড়া মোবাইল হাতে বাইরে বেড়িয়ে আসে।
এদের সবাইকে দেখে সে এক মুহূর্ত থমকে দাঁড়ায়, সময়ও যেন থেমে যায়, কেবল সময় নয় সবকিছু থেমে যায়, স্থির একটা ফ্রেম। এরপর খলবলে খুশি হয়ে ওঠে। ওর নানাকে ইংরেজীতে কি কি যেন বলে। ঠিক যেন একঝাঁক সদ্যফোটা মুরগির ছানা কিচকিচ করে ওঠে। হরিণ পায়ে ভেতরে গিয়ে আবার তড়িৎ ফিরে আসে। অঞ্জলি ভরা চকোলেট এনে শালিকের হাতে দেয়, কিছু বুঝে উঠার আগে শালিকের মায়ের হাতেও দেয়।
এরপর সে সেই বড় মোবাইলটা দিয়ে শালিক আর ময়নার ছবি তোলে। ওদের তোলা হলে আঙিনায় ছড়ানো মুরগির ছবি তোলে আর বিস্মিত হয়ে টুকটুক করে কি কি যেন বলতে থাকে আর হাসতে থাকে…বলতে থাকে…হাসতে থাকে…
কী মায়ামায়া সে অচেনা কথা! কী অদ্ভুত মিষ্টি সে হাসি!
ওরা সবাই ঘোরলাগা চোখে নির্বাক তাকিয়ে থাকে…কেউ যেন যাদুমন্ত্র বলে ওদেরকে  মূর্তি বানিয়ে দিয়েছে।
কী মায়ামায়া সে অচেনা কথা! কী অদ্ভুত মিষ্টি সে হাসি! বলতে থাকে আর হাসতে থাকে…
এরপর কে যেন ঘর থেকে ডাকলে সে অনিচ্ছায় চলে যায় ভেতরে। যাবার আগে ঘাড় ঘুরিয়ে এদের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ে…

মণ্ডল সাহেব কেমন যেন বিরক্ত হয়ে মৃদু স্বরে বলে ওঠে-
-এই তো দেখা সাক্ষাৎ হয়া গেল। রাইত বাড়োছে এবার তোরা…

Facebook Comments

comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

scroll to top