রুমি ও নারী বইটির লেখক পুলিন বকসী। প্রকাশিত হয়েছে গ্রন্থিক প্রকাশন থেকে। মেলায় স্টল নং ৪১৩-৪১৪
রুমি তাঁর সাহিত্যে নারীকে নানাভাবে উপস্থাপন করেছেন। নারীকে কখনো তুলনা করেছেন কা’বার সাথে, কখনো আবার কোরানের অক্ষরের সাথে। তাঁর বিচিত্র এই চিন্তা-ভাবনা আমাদের দেখিয়েছে, নারীকে আপাত সামাজিক ডমিন্যান্ট ডিসকোর্সের বাইরে গিয়েও ভাবা যায়। তাঁর ভাবনা এও দেখায় যে, একজন নারী শুধু ‘লৈঙ্গিক’ সত্ত্বা নয় বরং সে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকল্পের নানা অসঙ্গতির শিকড় খোঁজার আয়না। সেই আয়নায় আমরা নিজেদের সুরত দেখতে পাই, নিজেদের নানা ‘দস্যুবৃত্তি’কে চিহ্নায়ন করতে পারি। সেই সাথে পরিশুদ্ধ খোদায়ী রাজ্যের বাসিন্দা হয়ে উঠতে পারি। রুমির জমিনে নারী হলেন সেই সত্ত্বা যার মাধ্যমে ব্যক্তি নিজেকে ভাঙ্গতে পারে আবার নতুন করে নির্মাণ-পূণর্নির্মাণ করতে পারে। পুনর্নির্মিত এ জমিনে আপনি, আমি, নারী-পুরুষ সবাই হয়ে উঠতে পারি অস্তিত্বশীল খোদায়ী বেহেশতের একেকজন বাসিন্দা।
রুমি’র কাল বিবেচনায় তিনি নারীকে যেভাবে দেখতে চেয়েছেন, তা হাল জমানায়ও সম্ভবত কল্পনাতীত। তাঁর ভাবনার ‘নারী’ কোন নির্জীব সত্ত্বা নয়। তিনি নারীকে প্রচলিত সামাজিক ন্যারেটিভে হাজির না করে সোসিওপলিটিক্যাল কর্তাসত্ত্বা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এই উপস্থাপন ব্যাক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকেও করে তোলে গতিশীল। তাই তাঁর নানা বক্তব্যে, সাহিত্যে কিংবা আধ্যাত্ম ভাবনায় নারীর হাজিরা থাকে সরব। ‘রুমির রিপাবলিকে’ নারীর সেই হাজিরা হয় কন্যা হয়ে, স্ত্রী হয়ে কিংবা বহুদূর থেকে আগত কারাভ্যানের ‘বেশ্যা’ হয়ে। এই নারীরা পারিবারিক-সামাজিক নর্মস নির্মান করে। খোদায়ি বহুত্বের দুনিয়ায় একনিষ্ট বান্দা হয়ে তাঁর-ই আদেশ বাস্তবায়ন করে।
লেখকের আগের প্রকশিত বই: মুতাজিলা