‘সান্ধ্যসনেটসমূহ’ থেকে তিনটি কবিতা // অহ নওরোজ

ফণারা আনত হলে

পাতাদের সকল হলুদ যখন অনেক কাঁপে

কিংবা অবিদিত পরিসরে গহনাধিক নিকিয়ে

গাঢ় কোনো অবসাদ খুলে রাখে অগছালো স্বরে—

কিংবা নিকথার রাতে সব পূর্ণিমাসন্ধ্যা ফুরালে

ভাঙা অস্থিরতার ভেতরে যখন অনেক কিছু

কেবল পিছলে যায়, কেবলই নুয়ে পড়ে মৃদ্যু

অথবা কেবল কোনো পরিযায়ী ছায়ার মেজাজে

সীমাহীন কোলাহল করে সাদা মাথার পেছনে—

 

তখনই বস্তুগুলো ডোরাকাটা আলো হয়ে যায়

আর সব আবছায়া জানু পেতে বসে থাকে কাছে—

যেন কিছু নেই মুকুরিত করে ফালি রোদ আনে

কিংবা ছেদ রাখে প্রকাশিত সব জাঁকালো সন্তাপে—

যেন দূর কোনো পাহাড়ের গায়ে কুহক আগুন

যাতায়াত ভুলে ফণা রেখে চুপ করে শুয়ে আছে—

 

দ্বিধাগুলো অবিদিত

রাত্রিদের কোলাহল মুছে যাওয়ার

শব্দের ভেতর যদি কখনো প্রখর

আনকোরা রোদ আলুলায়িত স্বভাবে

অনায়াসে ঢুকে পড়ে; যদি খুব কাঁপে,

যদি আরো দ্বিধা আনে খুলে রাখা চোখে

কিংবা ইশারায় করোটির চারপাশে

ভ্রান্তিদের জড়ো করে, অথবা করে না

কিংবা তাদের উত্তাপ ঘনীভূত করে—

 

তখন কেবল যেন নিজেরই কাছে

জানু পেতে বসি—যেন ফিরে ফিরে আসি—

পথভোলা দ্বিধাদের যেন খুব চিনি—

রাত কিংবা অনিদ্রায় অথবা সন্ধ্যায়

মগজের কাছে শুয়ে শুয়ে শুধু দেখি

মরুভূমিরাত হেলে আছে কেবলই—

 

যারা হাঁটে বীবরের পথে

 

ঘন রোদ ভরা কম্বুরেখ পথ ধরে

ক্রমাগত যারা বাতাসের দেহ ভেঙে

অচেনা আভাসে আস্থা রেখে অতি ধীরে

নরম মেজাজে সব কোলাহল ছেড়ে

মহাসন্ধ্যা কিংবা তারও অনেক পরে

মাধবী অথবা তারাফোটা অন্ধকারে

শুধু হেঁটে গেছে; যারা অবসাদ ভুলে

কেবল হেঁটেছে বীবরের পথ ধরে—

 

তারাই শুনেছে শুধু শব্দ দূরবর্তী,

কিংবা পাতায় পাতায় জড়ানো বাতাসে

কোনো এক বিকেলের অনুপম স্মৃতি—

অথবা কখনো কোনো ফেলে রাখা ছায়া

আর ভোরের পিছনে জড়ো করে রাখা

সূর্যের অমেয় নাভি দেখেছে কিছুটা—

Facebook Comments

comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

scroll to top