ভ্রমণ ও ভ্রমণসাহিত্য // ক্ষমা মাহমুদ

আদিকাল থেকে মানুষের ‌অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে ভ্রমণের নেশা। মানুষ মূলত যাযাবর, এ কথা বললে অত্যুক্তি হবে না মনে হয়! যাযাবর জীবন ত্যাগ করে বেশিরভাগ মানুষ আজ যখন  সামাজিক ছাতার নীচে তখনও এই সামাজিক মানুষ সুযোগ পেলেই পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটে বেড়ায়। কেউ ‌অজানা আকর্ষণের নেশায় পাড়ি দেয় আসমুদ্র হিমাচল, কেউ প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবন থেকে পালাতে অবসাদ কাটাতে নতুন করে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যে ঘুরে আসে চেনা জগতের বাইরে। নানা রকম কাজের কারণেও মানুষকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পাড়ি দিতে হয়। কারণ যাই হোক, ইচ্ছা, প্রয়োজন আর সামর্থ্য থাকলে মানুষের পায়ের তলার সর্ষে তাকে বিশ্বময় ছুটিয়ে নিয়ে বেড়াবেই তাতে কোন সন্দেহ নেই তাই তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেই গিয়েছেন, ‘আমি চঞ্চল হে, আমি সুদূরেরও পিয়াসী।’

সত্যি বলতে কি, ভ্রমণ এক নেশা, এমনই এক আশ্চর্য নেশা যার কারণে মানুষ গাঁটের পয়সা খরচ করে, মৃত্যু ভয়কেও জয় করে বেরিয়ে পড়ে বিপদসংকুল সব পথে। ভ্রমণের এই নেশা মানুষের কখনও থামেনি বরং বেড়েই চলেছে অবিরত। ইউরোপ আমেরিকার মানুষ বছর জুড়ে সারা বিশ্বে ঘুরে বেড়ায় আমরা দেখি, কিন্তু আমাদের দেশে কিছুদিন আগেও এত ব্যাপকভাবে মানুষ ভ্রমণ করতে পারেনি। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষই তাদের প্রবল ইচ্ছাশক্তি বা অর্থের জোরে দুর্গম পথ পাড়ি দিতে পারতো বা বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে পারতো কিন্তু পৃথিবীকে দেখার আর জানার নেশা এখন আর মুষ্টিমেয় লোকের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়ে পড়েছে অতি সাধারণ মানুষের মাঝেও। যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি ভ্রমণের দুর্গমতা দূর করে মানুষকে ভ্রমণে উৎসাহিত করেছে। জীবনযাত্রার উন্নয়নের সাথে ভ্রমণকে মানুষ তার জীবনের একটা প্রয়োজনীয় অংশে পরিণত করেছে এখন, একথা বলা যায়। ভ্রমণের জন্যে মানুষ এখন আলাদা বাজেট করছে। অনেকেই আছেন যারা জীবনের অন্য প্রয়োজন বাদ দিয়ে ঘোরার জন্যে টাকা সঞ্চয় করে বের হয়ে পড়ছেন সময় সুযোগ মত, এটা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনেরও একটা ইঙ্গিত দেয়। নারী পুরুষ নির্বিশেষে ভ্রমণ করছে। মেয়েরাও এখন এদিক দিয়ে পিছিয়ে নেই, দলেবলে কিংবা একদম একাও বেরিয়ে পড়ছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে। আবার নেশা ছাড়িয়ে ভ্রমণ বহু মানুষের পেশাও বটে। ট্রাভেল কোম্পানিগুলো বছর জুড়ে নানাভাবে ভ্রমণেচ্ছু মানুষদের পৃথিবীর নানা প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। মেয়েরাও ভ্রমণপেশায় যুক্ত হয়ে নজির সৃষ্টি করেছে এবং দারুণভাবে সফলও হচ্ছে।

বিভিন্ন উদ্দেশ্যে মানুষ ভ্রমণ করে। নতুন জায়গা ভ্রমণে নতুন সব অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে- যা তার নিজস্ব সঞ্চয়, যা তাকে সমৃদ্ধ করে, যদিও সে একা সমৃদ্ধ হয়। কিন্তু যখন কেউ তার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা লেখার মাধ্যমে অন্যের সাথে ভাগাভাগি করে তখন বহু মানুষ সেটার স্বাদ গ্রহণ করতে পারে; সেই লেখাপড়ার মাধ্যমে অন্যদের মানসভ্রমণ হয়, তাঁরাও সমৃদ্ধ হয়, নতুন কিছু জানা হয়, সামগ্রিকভাবে সেটা সমাজে একটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। আগের দিনে দু্রূহ যোগাযোগ ব্যবস্থায় সংখ্যায় কম হলেও ভ্রমণ হয়েছে সারা পৃথিবী জুড়ে; যারা ভ্রমণ করেছেন, হেঁটেছেন পৃথিবীর পথে পথে, পাড়ি দিয়েছেন সব দুর্গম পথ, তাদের অনেকের কাছ থেকে আমরা পেয়েছি অসাধারণ সব ভ্রমণ কাহিনী, জানতে পেরেছি যুগে যুগে পৃথিবীর নানা কোণের নানান বিচিত্র জায়গার চমকপ্রদ সব গল্প। মার্কো পোলো, হিউয়েন সাং, ফা-হিয়েন, ইবনে বতুতা, মেগাস্থিনিস, বার্নিয়ের তাদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা লিখেই পৃথিবীতে অমর হয়ে আছেন। তারা তাদের ভ্রমণের বাস্তব গল্প লিখে গেছেন বলেই সেসব পড়ে আজও আমরা টাইম মেশিনে করে সেইসময়ে ঘুরে আসতে পারি- সে সমস্ত জায়গার তখনকার সমাজব্যবস্থা অর্থনীতি, রাজনীতি, নানাকিছু সম্পর্কেই জানতে পারি। এখানেই ভ্রমণ গল্পের চিরন্তন আবেদন ও আনন্দ। তবে ‘ভ্রমণ থেকেই হয় ভ্রমণ কাহিনী কিন্তু ভ্রমণকারীদের সকলের হাত দিয়ে নয়।’ – অন্নদাশঙ্করের এই কথার রেশ ধরে বলা যায়, অনেকেই ভ্রমণ করে কিন্তু সবাই ভ্রমণসাহিত্য লিখতে পারে না। গভীর জীবন পর্যবেক্ষণ, প্রগাঢ মমতায় প্রকৃতি অবলোকন এবং বারবার পড়ার কৌতূহল জাগিয়ে তোলে যে ভ্রমণ গল্প তাকেই বলা চলে ভ্রমণসাহিত্য। শুধু ঘোরার গল্প করলেই হবে না তার মধ্যে সাহিত্যের নির্যাস থাকতে হবে তবেই সে ভ্রমণসাহিত্য পাঠে, হাওয়া বদলের স্বাদ পাওয়া যাবে।

বাংলা ভ্রমণসাহিত্যের বয়স দেড়শো বছরের বেশী নয়, তার মধ্যে রবীন্দ্রনাথের হাতে তা সার্থক রূপ পেয়েছে; যেখানেই গিয়েছেন, সে জায়গার বিবরণ পাঠককে মুগ্ধ করেছে, সেসব দেশের অনেক কিছু জানতে সাহায্যে করেছে। সেযুগের সেসব দেশ নিয়ে তার গভীর পর্যবেক্ষণের কারণে- জাভাযাত্রীর পত্র, রাশিয়ার চিঠি , ইউরোপ প্রবাসীর পত্র প্রভৃতি ভ্রমণ কাহিনী উচ্চমানের সাহিত্য হিসেবে পরিগণিত হয়। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, – ‘সেই প্রথম বয়সে যখন ইংল্যাণ্ডে গিয়েছিলুম, ঠিক মুসাফিরের মতো যাইনি। অর্থাৎ রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে বাহির থেকে চোখ বুলিয়ে যাওয়া বরাদ্দ ছিল না, ছিলেম অতিথির মতো, ঘরের মধ্যে প্রবেশ পেয়েছিলুম।’ একটা দেশে ঘুরে শুধু চোখ বুলিয়ে চলে আসেননি, ভেতরে গিয়ে বুঝতে চেয়েছেন সেই সমাজের ভেতরের কাঠামোকেও, যা পাঠকও জানতে পেরেছেন তার লেখার মাধ্যমে।

জাপান একসময় একেবারেই রহস্যে ঢাকা দেশ ছিল। রবীন্দ্রনাথের জাপানযাত্রী প্রকাশেরও আগে, ঢাকার মেয়ে হরিপ্রভা তাকেদার বঙ্গমহিলার জাপান যাত্রা  প্রকাশিত হয়, বৈবাহিকসূত্রে তার চার মাস কালের জাপানবাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে। এই বইয়ের মাধ্যমে তৎকালীন পূর্ববঙ্গ ও জাপানের সমাজের তুলনামূলক বিবরণের মাধ্যমে হরিপ্রভা সেই সময়ের এক ‌অচেনা জাপানকে পাঠকের সামনে তুলে ধরেন যা ঐ সময়ের এক অনন্য দলিল।

প্রথম লেখা ভ্রমণ কাহিনি দেশে-বিদেশে’ দিয়েই সৈয়দ মুজতবা আলী বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে আছেন। সেই সময়ের আফগানিস্তান দেশটি নিয়ে যে রচনাশৈলীতে এই বইটি তিনি লিখেছেন তা আজও পাঠককে ধরে রেখেছে। এই বইয়ের মাধ্যমে তখনকার আফগান জীবনের, আফগান মানুষের মনের খোঁজ পাওয়া যায়। এই একই দেশ নিয়ে সাম্প্রতিক কালে ভ্রমণ সাহিত্যের আরেক লেখক মঈনুস সুলতানের কাবুলের ক্যারাভান সরাই বইটির মাধ্যমে আফগান জীবনের ভেতরে পরাশক্তির দ্বিচারিতা আর তার ফলে মানুষের জীবনের অবর্ণনীয় যন্ত্রণার এক মর্মস্পর্শী চিত্র পাঠক জানতে পারে। একই দেশ নিয়ে দুই সময়ে লেখা দুইটি বই পাঠকের সামনে একটা দেশের তুলনামূলক যে চিত্র তুলে ধরে তাতে দুজন লেখকের দুই সময়ের ভ্রমণসাহিত্যে এই দেশটা সর্ম্পকে পাঠককে গভীর ধারণা দেয়। ভ্রমণ গল্প তাই শুধু এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা যাওয়ার গল্পই নয়, ভ্রমণকারীদের লেখনীর মাধ্যমে যুগে যুগে পৃথিবীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনগুলোর গল্পও বটে।

হিমানীশ গোস্বামী তার বই দার্জিলিং সঙ্গীতে এই শহরের পত্তনেরও আগের ইতিহাস থেকে শুরু করে একটু একটু করে শহরটার এগিয়ে চলার গল্প যেভাবে বলে যান তার নিজের ভ্রমণকে কেন্দ্র করে, সেটা যেকোন পাঠককে তার জীবনের অন্যতম সেরা বই পড়ার অভিজ্ঞতার স্বাদ দিতে পারে।

ফারহিম ভীনার লন্ডনের দিন-রাত্রি এমনি একটি সাহিত্যগুণ সম্পন্ন ভিন্নধর্মী ভ্রমণকাহিনী। লন্ডন বাসের পাঁচ বছরের  অভিজ্ঞতার বয়ানে সে দেশের বহু ভাষাভাষী মানুষ ও সংস্কৃতির ভেতরের খুঁটিনাটি বর্ণনায় পাঠককে অন্য এক দেশের অন্দরকে জানার অনবদ্য এক অভিজ্ঞতা দেয়।

কলকাতার মেয়ে সেরিনা জাহান ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা রাশিয়ায় লেখাপড়া করতে গিয়ে একটা ইতিহাস ভাঙতে দেখার সাক্ষী হয়ে গেলেন যা তিনি তার ধূসর মস্কো গ্রন্থে বিবৃত করেছেন, আর পাঠক জানতে পেরেছে একজন প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে সেই ইতিহাসের অসাধারণ বয়ান। একইরকম বিষয় নিয়ে লেখক খুররম মমতাজ লিখেছেন সেই রাশিয়া এই রাশিয়া, যেখানে উঠে এসেছে দুই সময়ে দেখা সেই দেশের পরিবর্তনের গল্প। হাসনাত আব্দুল হাই ১৯৭৮ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভ্রমণ করেছিলেন তার কাজের কারণে। নানান ব্যস্ততায় তখন এই ভ্রমণ নিয়ে কিছু না লিখতে পারলেও আটচল্লিশ বছর পরে সেই সময়ের ভ্রমণকালীন নোট এবং স্মৃতির উপর ভরসা করে সম্প্রতি তিনি সেই ভ্রমণের উপর লিখেছেন একদা সোভিয়েত ইউনিয়নে। পৃথিবীর ইতিহাসে মানুষের সাম্যের জীবন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত এক দেশের নানা সীমাবদ্ধতা, ভালোমন্দ, অভিজ্ঞতার সাথে এই বইগুলোর মাধ্যমেই পাঠকদের পরিচয় ঘটে, যে অভিজ্ঞতা অনন্য।

বহু সাহিত্যিকই বাংলা ভ্রমণসাহিত্যে অসাধারণ সব ভ্রমণ অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ বই উপহার দিয়েছেন যা এখনও পাঠকদের আগ্রহের কারণ। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের পালামৌ, রাহূল সাংকৃত্যায়নের ভোলগা থেকে গঙ্গা, অন্নদাশংকর রায়ের পথে প্রবাসে, প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ’র ইস্তাম্বুল যাত্রীর পত্র বাংলা ভ্রমণসাহিত্যের অনন্য সম্পদ। বাংলা সাহিত্যে ভ্রমণ কাহিনী আরো ডালপালা ছড়িয়েছে বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব বসু, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নবনীতা দেব সেন, মৈত্রেয়ী দেবী, জসিমউদ্দীন, হূমায়ুন আহমেদ, বুদ্ধদেব গুহ, মনোজ বসু, এদের মত বিখ্যাত সব লেখকদের হাত ধরে।

বাংলাদেশে অনেকদিন ধরেই যাঁদের হাত থেকে চিত্তাকর্ষক সব ভ্রমণকাহিনী পাওয়া যাচ্ছে তাদের মধ্যে ফারুক মঈনউদ্দীন, মঈনুস সুলতান, আনোয়ারা সৈয়দ হক, শাকুর মজিদের মত খ্যাতিমান লেখকরা অন্যতম। পাশাপাশি নিয়মিত ভ্রমণ করছেন এবং ভ্রমণের সেসব অভিজ্ঞতা লিখে পাঠককে মানস ভ্রমণ করাচ্ছেন এমন লেখকদের সংখ্যাও এই সময়ে কম নয়। জিকরুর রেজা খানম, কামরুল হাসান, সঞ্জয় দে, ফাতিমা জাহান, এলিজা বিনতে এলাহী এই সময়ের ভ্রমণসাহিত্য অঙ্গনের পরিচিত মুখ যারা নিয়মিত তাদের ভ্রমণ আদ্যপান্ত হাজির করছেন পাঠকের সামনে। খুব সম্প্রতি এন্টার্কটিকা অভিযানে গিয়ে মহুয়া রউফ প্রথম বাংলাদেশী নারী অভিযাত্রী হিসেবে সেখানে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরেছেন। তার এই অভিযান নিয়ে লেখা দখিন দুয়ার খোলা  বইটি প্রকাশের কয়েক মাসের মধ্যেই পুর্ণমুদ্রণের আয়োজন প্রমাণ করে ভ্রমণসাহিত্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ। নানান সীমাবদ্ধতায় মানুষ অনেক সময় নিজে ভ্রমণ করতে না পারার অতৃপ্তি পুষিয়ে নেয় স্বাদু সব ভ্রমণ কাহিনী পড়ে।

এই সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চালচিত্রেও দেখা যায় মানুষ কত ভাবে, কত বিচিত্র জায়গায় তাদের পা ফেলছে। সেসব অভিজ্ঞতা নিয়ে তারা নিয়মিত পত্রপত্রিকায় লিখছে, বই বের করছে, পাঠকদেরও সেগুলো নিয়ে উৎসাহের কমতি নেই। ভ্রমণ নিয়ে লেখার সংস্কৃতি দিন দিন বাড়ছে বলেই পত্রিকাগুলো ভ্রমণের উপর আলাদা জায়গা রাখছে, মানুষ সেগুলো আগ্রহ নিয়ে পড়ছে, এভাবেও ভ্রমণসাহিত্য আরো বেশি প্রসার লাভ করছে।

অসীমের প্রতি মানুষের এই টান বা অজানাকে জানতে চাওয়ার আকর্ষণ চিরন্তন। একঘেয়ে জীবনের বাইরে মানুষ নতুন কিছুর সন্ধান করে, পরিবর্তন চায়। পৃথিবীর পথে পথে মানুষ যে জ্ঞান লাভ করে তা কখনই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দিতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ আগের যেকোন সময়ের চেয়ে এখন বেশী ভ্রমণ করে যা সামাজিক বা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বেশ বড় ভূমিকা রেখে চলেছে। সমাজের সব স্তরের মানুষই যেন নিয়ম করে ঘুরতে পারে, এমন কথা অবাস্তব শোনালেও তেমন দিন নেমে আসুক আমাদের এই পৃথিবীতে,  এমন স্বপ্ন আমরা দেখতে চাই। ভ্রমণের মাধ্যমে জীবনকে বহুমাত্রিকভাবে আবিষ্কার এবং সেই বহূমুখী অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ভ্রমণসাহিত্যের উত্তরোত্তোর প্রসার সমাজের নেতিবাচক চর্চা কমিয়ে মানুষকে জ্ঞানমুখি এক সুন্দর জীবনের আস্বাদ দিতে পারে, যা এই মুহূর্তের যুদ্ধবিদ্ধস্ত অস্থির পৃথিবীতে খুবই কাম্য। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি, দেশে দেশে কত না নগর রাজধানী, রয়ে গেল অগোচরে।’ তাই বহূল চর্চিত সেই কথাটাও আবার বলতে হয় চরৈবেতি, চরৈবেতি- এগিয়ে যাও, এগিয়ে যাও।

Facebook Comments

comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

scroll to top