বহুদিন পর সূর্য মামা দেখা দিলেন অক্সফোর্ডের আকাশে। ঝলমলে রোদে কে বলবে যে তিনি বেশ কিছুদিন ধরে নিজের ঘরে আরাম করে ঘুমোচ্ছিলেন! কে বলবে যে কালও আকাশে শুধু মেঘের রাজত্ব ছিল!
‘গল্পের প্লট খুঁজছিলে না ঊষা?’ গম্ভীর গলায় বলল সহেলি,‘পেলে?’
ঊষা মন চলে গিয়েছিল তার ছোটবেলায়। সেই সুন্দর সবুজ গ্রাম, খোলা মাঠ। ঝড়ের সময়ে আম কুড়োনো। আম কুড়োতে গিয়ে ছোট বোন আর চাচাতো ভাইবোনদের সাথে ঝগড়াঝাঁটি, মারামারি। এরপর ভিজে একাকার হয়ে বাড়ি ফিরে মায়ের ধমক তো আছেই। সেই বাড়িটা এখন পোড়োবাড়ি হয়ে রয়েছে। সেই সময়টাকে লন্ডনে এসে আরো বেশি করে মিস করে সে।
সহেলির কথায় তার ভ্রম ভাঙল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,‘বিশেষ কোনো প্লট এখনো পাইনি। রহস্য কাহিনীর প্লট পাওয়া সোজা কথা নয়।’
‘রহস্য কাহিনী কয়েকটা পড়তে পারো। তাহলে যদি প্লট আসে।’ পরামর্শ দিল অয়ন।
ঊষা হতাশভাবে এসে মাঝখানের সোফায় বসল। তার বাম পাশে সহেলি আর ডান পাশের সোফায় অয়ন বসে রয়েছে। সে বলল,‘্আমার রহস্য-রোমাঞ্চ কাহিনী লেখা শুরু হয়েছে সহেলির সাথে পরিচয়ের পর। ওর কেস মানে আমার ডিটেকটিভ রমনার কেস, ওর রহস্য উন্মোচন মানে রমনার রহস্য উন্মোচন। সুতরাং,’ সে সহেলির দিকে তাকিয়ে বলল,‘সহেলি যদি কোনো রহস্য না পায়, তবে রমনা কী করবে!’
সহেলি কোনো উত্তর দিল না। মুচকি হাসল। সেকেন্ডে আবার হাসি মিলিয়েও গেল।
‘হাসছ যে?’ হতাশভাবে বলল ঊষা,‘এটা তো সত্যিই বহুদিন আমরা কোনো রহস্য পাইনি। কবে পাব কে জানে? কাল্পনিক রহস্য আর বাস্তব রহস্যে সত্যিই শত মাইলের, আকাশ-পাতাল তফাত!’
‘আকাশ আর পাতালের তফাত শত মাইল না।’ হাসি চেপে সহজভাবে বলার চেষ্টা করল অয়ন,‘মিলিয়ন মাইল। তারও অনেক বেশি!’ সহেলি না হাসলেও, তার চেহারায় হালকা কৌতুকের আভাস দেখা গেল।
‘উফ! অয়ন! সমস্যাটা কী তোমার বলবে!’ রেগে বলল ঊষা,‘সারাক্ষণ আমার ভুল ধরতে আসো কেন তুমি? বিজ্ঞানের ছাত্র বলে মহাভারত অশুদ্ধ করে ফেলেছো নাকি! লেখকরা এরকম অনেক কথাই ব্যবহার করে!’
‘আচ্ছা ঠিক আছে! ঠিক আছে! ঠান্ডা হও! রেগো না! শুধু মজা করেছি!’ তার রাগ কমানোর চেষ্টা করল অয়ন। সহেলি কোনো কথা না বলে নিভৃতে মজা নিল।
সহেলি রান্নাঘরে চলে গেল কফি বানাতে। এখনই তিনজন মিলে চা খেয়েছে। একটু পরেই একজন গেস্ট আসবেন। ব্রিটিশ মানুষ তো আর চা খাবেন না।
‘লোকটা বেশ অদ্ভুত ধরনের! তাই না সহেলি?’ সহেলি ফিরে এসে বসার কিছুক্ষণ পর বলে উঠল অয়ন।
‘কোন লোকটা?’ জিজ্ঞেস করল সে।
‘ওই তো যার সাথে পরশু দিন দেখা হলো, জ্যাক বারবেরি। ভুলে গেলে?’ বলল অয়ন।
‘হুমম।’ জবাব দিলেন প্রফেসর সহেলি সরকার,‘ভিন্নতর। ইউনিক।’
‘ভীষণ বদমেজাজি! আর অহংকারীও!’ আস্তে করে বলল ঊষা। সে পূর্বে জীবনবৃত্তিক বিভিন্ন গল্প লিখত। সহেলির সাথে পরিচয় হওয়ার পর সে গোয়েন্দা-অ্যাডভেঞ্চার গল্প লিখতে শুরু করেছে। সাহিত্য তার অত্যন্ত প্রিয়, জীবনের অংশ। তবে তার সমস্যা একটাই, সে ঠিক ভাবে নাম-ধাম মনে রাখতে পারে না। ভুলভাল বলে ফেলে।
সহেলি বলল, ‘বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন, Multitalented.’ সে সোফায় আঙুল ঠুকতে ঠুকতে বলল,‘দু’হাত সমান তালে চলে, যাকে বলে সব্যসাচী বা Ambidexter। বড়লোক বাড়ির বড় ছেলে, বংশানুক্রমিকভাবে কোটি টাকার ব্যবসার মালিক এখন। তবে অন্যান্য বহু কাজেই আছেন। বড়লোকেদের বড়-বড় কারবার কথাটা তো এমনি এমনি প্রচলিত হয়নি।’
ঊষা আর অয়ন সহেলির কথা শেষ হতেই মুখ চাওয়াচাওয়ি করল। অয়ন হতবাক কন্ঠে বলল,‘তিনি কী ধরনের মানুষ তা তাঁর ভাবভঙ্গি দেখেই বোঝা গেছে। কিন্তু..উনি Ambidexter, তা তুমি কী করে জানলে?’
‘লোকটা আমার সাবজেক্ট শুনে উপহাস করেছিলেন!’ বেশ ক্ষিপ্তস্বরে বলল ঊষা, ‘আর আমি সাহিত্যের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে বলতে গেছি আর যেভাবে ব্যবহার করলেন! ’ একটু থেমে দম নিয়ে সে বলল,‘তবে তোমার ওপর খুশি হয়েছিলেন তুমি উনার সিগারেট আর ব্র্যান্ডি খাওয়ার অভ্যেসের কথা বলেছিলে দেখে। কিন্তু..সেটা বললে কী করে?’
সহেলি স্বাভাবিক স্বরে বলল,‘ আমার পাশের সোফায় বসেছিলেন। তখন মদের গন্ধ পেয়েছিলাম। কোটের বাম পাশে ভেতরের পকেটে নিশ্চয়ই রেখেছিলেন ছোট মদের বোতল। হাত দিয়ে রেখেছিলেন সেদিকে। হয়তো কাচের বোতল, ভেঙে যাওয়ার ভয় আছে। আবার আমাদের সামনে ভদ্রতার খাতিরে বের করে রাখতেও পারছিলেন না। আর, ঠোঁট আর আঙুল দেখে সিগারেট খোরদের চেনা যায়।’
****
দু’ দিন আগের ঘটনা।
অক্সফোর্ডের ওয়ালটন স্ট্রিটে অবস্থিত রবার্ট ব্রাউনের বাড়ি। বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা এল.আই.এ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক তিনি। তার নেতৃত্বে কাজ করে প্রায় ২০০ জন গোয়েন্দা। বেসরকারি হলেও, বহু সরকারি কাজেই ভূমিকা রেখেছেন তাঁর সংস্থার গোয়েন্দারা।
বয়স বেশি হলেও বেশ ফিট আছেন এখনো। হাসিখুশি, সর্বদা উৎফুল্ল। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে গবেষণার কাজ চালানোর জন্য স্কলারশিপ পেয়ে আসা ও প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত হওয়া বাংলাদেশী মেয়ে সহেলি সরকার তার ছোট ছেলের প্রিয় প্রফেসর। তার সাথে ব্রাউনের পরিচয় একটা ঘটনার মধ্য দিয়ে। একটি রহস্য যা ব্রাউনের গোয়েন্দারা ভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন, তা ভেদ করে দিয়েছিলেন সাইকোলজি প্রফেসর সহেলি। ক্রিমিনাল সাইকোলজি তার জল্পনা-কল্পনার মূল বিষয়। তাই কয়েক মিনিটেই সে সমস্যার সমাধান করে দেয়। সাথে অপরাধীও ধরা পড়ে। এভাবেই তার সাথে ও তার প্রিয় দুই বন্ধু অক্সফোর্ডের লিটারেচার প্রফেসর ঊষা আহমেদ ও কেমিস্ট্রি প্রফেসর অয়নের সাথে রবার্ট ব্রাউনের সাক্ষাৎ। ক্রমে তারা নিকটাত্মীয় ও বিপদের বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেদিন মিসেস ব্রাউনের প্রস্তাবে তাদের তিনজনকে বিকেলে কফির দাওয়াত দেন ব্রাউন।
কফি খেতে খেতে সাধারণ কথাবার্তা বলছিলেন মি ব্রাউন, সহেলি, অয়ন ও ঊষা। হাসিমজাও হচ্ছিল বেশ। সে সময়ে বাড়িতে প্রবেশ করলেন এক ভদ্রলোক। ব্রাউনের মতনই বয়স, চেহারায় প্রচ্ছন্ন মিল লক্ষ করা যায়। পড়নে কোট-প্যান্ট। ভাবভঙ্গিতে মনে হয় যেন বয়স যে বেশি, তা তিনি প্রকাশ করতে চান না। সাথে মুন্সিয়ানা তো আছেই। তবে চেহারায় ঔদ্ধত্যের সঙ্গে কিছুটা ভয় ও আতঙ্ক মেশানো রয়েছে। তা হয়তো তিনি লুকিয়ে রাখতে চাইছেন।
‘আরে জ্যাক! হঠাৎ! কী খবর?’ দাঁড়িয়ে হেসে বললেন মি ব্রাউন।
‘হুম। কেমন ভালো, তা বলতেই এলাম!’ বলতে বলতে আর্মচেয়ারে গা এলিয়ে দিলেন।
‘কেন? সব ঠিক আছে?’ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন ব্রাউন।
হতাশার শ্বাস ফেললেন জ্যাক। পাশে চোখ পড়তেই সোজা হয়ে বসে বলে উঠলেন, ‘ওহ! তোমার অতিথি এসেছে, খেয়ালই করিনি!’
ব্রাউন সহেলিদের সাথে উনাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন, ‘ও জ্যাক বারবেরি, ‘‘বারবেরি’’ ড্রেস ব্র্যান্ডের বর্তমান মালিক। আমার মাসতুতো ভাই।’ সহেলি, অয়ন আর ঊষাকেও একে একে পরিচয় দিলেন।
‘আপনিই..তো..পরপর সাত বছরের স্পোর্টস কার কম্পিটিশন চ্যাম্পিয়ন! তাই না?’ বিষ্ময়ের সাথে জিজ্ঞেস করল ঊষা।
‘হুম। ঠিকই ধরেছো। বয়স হলেও, এই কাজটায় আমি সবসময়েই চ্যাম্পিয়ন।’ উত্তর দেয়ার কিছু সময় পর তিনি কিছুটা বিস্ময়ের সাথে বললেন,‘অক্সফোর্ডে সাহিত্য নিয়েও গবেষণা হয় বুঝি?’
‘হ্যাঁ। তা তো হয়ই। ইংরেজী সাহিত্য যথেষ্ট সমৃদ্ধ। আর বাংলা তো অবশ্যই।’ উত্তর দিল ঊষা।
বারবেরি ঊষার দিকে ব্যঙ্গাত্বক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে হেসে বললেন,‘কাজকর্মের অভাব আছে বোধহয়, তাই গবেষণার জন্য এমন বিষয় বেছেছো!’
নিজের প্রিয় বিষয় নিয়ে এমন ব্যঙ্গ করায় ঊষা বেশ ক্ষেপে গেল। সে বলে উঠল,‘কেন? এটা কী অপ্রয়োজনীয় না কি? সাহিত্যের মাধ্যমে মানুষের মনে নতুন নতুন ধারণা জন্মায়, মানুষ স্বপ্ন দেখতে শেখে, আনন্দ পায়! জীবনকে চেনার চাবিকাঠি হলো সাহিত্য!..’
সে যখন এসব বলছিল, বারবেরির মুখটা তখন ধীরে ধীরে কঠিন হতে শুরু করেছে। হয়তো এটাই তার আসল রূপ। ঊষা আরও কিছু বলতো, তিনি বলে উঠলেন,‘সাহিত্য নিয়ে যারা কাজ করে তারা দেখছি শুধু গাধাই না, অভদ্রও! শুধু যে তারা অন্যের ব্যাপারে নাক গলায় তাই না, অভদ্র ব্যবহারও করে! শুনেছি তোমাদের শার্লক হোমস, এরকুল পোয়রোর ব্যাপারে। পুলিশ থাকতে এরা কেন নাক গলাতে আসে, এটাই তো বুঝে উঠতে পারি না! আর এই অভদ্র কাল্পনিক চরিত্রদের নিয়ে তোমরা মেতে থাকো! বেশি মেতে থেকেই অভদ্র হতে শুরু করেছে তোমার বয়সী ছেলেমেয়েরা!’
ঊষা উত্তর দিতেই যাচ্ছিল। বেশ একটা তর্কাতর্কি বেঁধে যেত। মাঝখানে ব্যাপারটা শিথিল করে দিল সহেলি। চমকে দিল মি বারবেরিকে।
‘আপনি হুইস্কি খান? তাই না?’ বলল সহেলি। তার চেহারায় নির্লিপ্ততা বিরাজ করছে।
মি বারবেরি কিছুটা হকচকিয়ে গিয়ে তার মুখের দিকে তাকালেন। কয়েক সেকেন্ড পর বললেন,‘হ্যাঁ..’
‘আর..চুরুটও। অ্যাম আই রাইট?’
‘হ্যাঁ খাই। কিন্তু..এখন তো একবারও খেলাম না! আসার কিছুক্ষণ আগে খেয়েছিলাম। সাথে..একটা ছোট বোতলে সবসময়েই রাখি, তবে এখানে আসার পর তো একবারও চুরুটও খাইনি, আর না হুইস্কি! তুমি তাহলে জানলে কী করে?’ তার দৃষ্টি সন্দিগ্ধ।
ব্রাউন এতক্ষণ চুপচাপ ছিলেন। এবারে হেসে বললেন,‘ওর অবজারভেশন আর প্রেডিকশন, দুটোই অত্যন্ত শক্তিশালী! তাই বলে দিল!’
‘তাই বুঝি!’ হাসলেন তিনি,‘এ তো অসাধারণ!’
সহেলি হালকা হেসে বলল,‘আমি খুবই সাধারণ ব্যাপার বলেছি মি বারবেরি। কিন্তু কোনান ডয়েলের শার্লক হোমস আমার জায়গায় থাকলে আপনার উইস্কির বোতলের মাপ, সাথে চুরুটের ধরন, সব বলে দিতেন। কথাটা একেবারেই মিথ্যে নয় কিন্তু। আর তাছাড়া..পুলিশের কাজে উনি কখনোই নাক গলান না। বরং পুলিশকে আসতে হয় তাঁর কাছে, সাহায্যের জন্য। কাল্পনিক হলেও, তাঁর চরিত্রের গঠন তাঁকে একরকম বাস্তব করে তোলে।’
সহেলির কথায় বারবেরি নিজের অনুশোচনা ঢাকার চেষ্টা করে বললেন,‘ও..তা ভালোই। তা তো ভালোই।’ সহেলি নির্লিপ্ত থেকে মি বারবেরির মুখ বন্ধ করে দিয়েছে দেখে খুশি ও একইসাথে অবাক হলো ঊষা ও অয়ন।
বারবেরির কিছু একটা মনে হতেই তিনি বললেন,‘ওহ রবার্ট, তোমাকে একটা জিনিস দিচ্ছি, একটু সময় পেলে কাজটা করে দিও।’ বলে তিনি কোটের ভেতরের পকেট থেকে ভাঁজ করা দুটো কাগজ বের করলেন। সেগুলো ব্রাউনের দিকে বাড়িয়ে দিলেন। ব্রাউন সহেলির পাশে বসেছিলেন। তিনি কাগজটার ভাঁজ খুলে একবার চোখ বুলিয়ে অবাক দৃষ্টিতে তাকালেন বারবেরির দিকে। কাগজের লেখাগুলো হাতে লেখা।
‘যা দেখছো ঠিকই দেখছো।’ বুকের কাছে হাত জড়ো করে বললেন তিনি,‘কাগজগুলো একটু কষ্ট করে অ্যাডভোকেট উইলিয়ামসনের কাছে পাঠিয়ে দিও। আমার উকিল দেশের বাইরে গেছেন। সে ছাড়া শুধু তাকেই চিনি। তুমি তার বন্ধু, তাই তোমাকে দিচ্ছি। কাজটা জলদি শেষ করতে হবে। অনলাইনের ওপরও আমি ভরসা করতে চাই না।’
ব্রাউন ক্ষীণ কন্ঠে বললেন,‘ঠিক আছে। কিন্তু..হঠাৎ উইল..কেন? সব ঠিক আছে?’
বারবেরি চোখ বুজে দম নিয়ে বললেন,‘আমার সমস্যাটার জন্য একজন গোয়েন্দা দরকার ব্রাউন। সেজন্যই তোমার কাছে আসা।’
‘কেন? কী হয়েছে?’ সন্দিগ্ধভাবে জিজ্ঞেস করলেন ব্রাউন।
বারবেরি দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। এরপর ঊষাদের দিকে চোখ বুলিয়ে বললেন,‘পরে বলব।’
‘ঠিক আছে।’ আস্তে করে কথাটা বলে রবার্ট ব্রাউন সহেলিদের সাথে সাধারণ কথাবার্তা বললেন। বারবেরিকে বললেন,‘তুমি বরং ওই রুমে বসো। সেখানেই কথা বলব।’
জ্যাক বারবেরি উঠে চলেই যাচ্ছিলেন, হঠাৎ কী মনে হতেই সহেলির দিকে তাকিয়ে বললেন,‘আমার কার্ডটা রাখতে চাও? লন্ডনে গেলে যোগাযোগের প্রয়োজন হতে পারে।’
সহেলি দাঁড়িয়ে ক্ষীণ হেসে বলল,‘নিশ্চয়ই।’
মি. বারবেরি তার প্যান্টের বাম পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করলেন। একটা কার্ড বের করে কোটের পকেট থেকে একটা কলম বের করে নিয়ে কার্ডটার পেছনে কিছু একটা লিখলেন। এরপর সহেলির দিকে বাড়িয়ে দিলেন।
‘লন্ডনে ‘বারবেরি’ শো-রুমে এসো। আবার অনলাইনে অর্ডারও করতে পারো। শো-রুমের ঠিকানা লেখা আছে। আবার, আমার বাড়ির ঠিকানা আর ফোন নাম্বারও লিখে দিয়েছি কার্ডের পেছনে।’ তার কার্ড দেওয়ার উদ্দেশ্য এবারে বোঝা গেল।