অর্চনা মাসিহ’র সাথে কথোপকথনে রমিলা থাপার ।। অনুবাদ অজিত দাশ ।। শেষ পর্ব

‘হিন্দুত্ববাদ আমাদেরকে একশ বছর পিছিয়ে দিয়েছে’– রমিলা থাপার

 

সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংস  ঘটনা, এখন খ্রিস্টানদের উপর শুরু হয়েছে। ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা মূলত কি সাব্যস্ত করতে চায়?

ফলাফলতো দেখতেই পাচ্ছ। বিজেপি এখন ক্ষমতায় । সংখ্যালঘুদের কী অবস্থা হচ্ছে তা স্পষ্টতই দেখতে পাচ্ছ। এগুলো কী পরিকল্পিত নয়? তারা এখন লাগামছাড়া অপরাধ করেই চলেছে।  তাদের থামানোর কেউ নেই। প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘এসব বিতর্ক নিয়ে আমাদের আলোচনায় বসা দরকার।’ এটা কি কোনো সমস্যার সমাধান হলো। এটা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন আলোচনার প্রশ্ন নয়। এই ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠীর হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার মত অবস্থা তোমার নেই, দেশকে যে এরা কোনদিকে নিয়ে যাচ্ছে। এটা মারাত্মক ক্ষতিকর।

খ্রীস্টানদের উপর হামলার ঘটনা কী পূর্বেও ভারতে ঘটেছিলো?

এখন যেমন হচ্ছে সেরকমভাবে হয়নি। পঞ্চম শতাব্দীতে শৈবরা কাশ্মীরে বৌদ্ধদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। সেখানে কিছু বৌদ্ধ ভিক্ষুকে তারা হত্যা করেছিল, তাদের মঠগুলোকে ধ্বংস করেছিল। সপ্তম শতাব্দীর দিকে শৈবরা তামিলনাড়ুতে জৈনদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, পরবর্তিতে আবার কর্ণাটকেও একই ঘটনা ঘটেছে। এরকম জাতিগত আক্রমণ ছিল যেখানে প্রতিযোগীতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বীতায় কিছু লোককে হত্যা করা হয়েছে। তবে সেটা অনেক সীমাবদ্ধ ছিল।

একটা সময় এই ঘটনা গুলো ছিলো একটি নির্দিষ্ট প্রদেশে ঘটে যাওয়া কিছু সমস্যা কেন্দ্রিক দুর্ঘটনা। কিন্তু বর্তমানে এগুলো সমগ্র ভারতবর্ষজুড়ে হচ্ছে। এর শেষ কোথায়? তখনকার কার্যকারণ আর বর্তমান কার্যকারণ অনেক ভিন্ন। এখন এগুলো অনেক পরিকল্পিতভাবে হচ্ছে।

কিন্তু তর্কের বিষয় হলো ভারতীয় ইতিহাস কী কোনোভাবে বামপন্থী চিন্তা বা ইতিহাসবিদদের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে?  

এ ধরনের বিতর্কগুলো মূলত সামনে নিয়ে আসে ফ্যাসিস্ট এবং প্রোটো-ফ্যাসিস্টরা যারা মতাদর্শিক আক্রমণ করতে শুরু করে। বিগত একশত বছর এগুলোই হচ্ছে। আমি জার্মান এবং ইতালিয়ান ফ্যাসিবাদের বেশ কিছু উক্তির সরাসরি সূত্র টেনে বলতে পারব, এখন পর্যন্ত যে ইতিহাস আমাদের শিখানো হচ্ছে তা বামপন্থীদের দ্বারা প্রভাবিত।

বর্তমানে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের যে বইগুলো পড়ানো হচ্ছে তার নব্বইভাগ বইয়ের লেখকই রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী ইতিহাসবিদ। অনেকক্ষেত্রেই বলা চলে আমাদের মত যারা এরকম জাতীয়তাবাদী ইতিহাস রচনার প্রচলন ভেঙ্গে বের হয়ে এসেছি তারা সকলেই একটা বিষয়ে একমত যে, আমাদের ইতিহাস এখনো  ১৯৪০-৫০ এর ইতিহাসে আটকে আছে। তাই লোকজন বলে যে বামপন্থীরা ইতিহাসকে বিকৃত করেছে এবং এরকম ইতিহাসগুলো যে মিথ্যে আশ্রিত তা স্পষ্ট বোঝা যাবে যদি কেউ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থগুলোর লেখক তালিকা থেকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে যে, সেখানে কত শতাংশ বই রয়েছে যেগুলো বামপন্থী ইতিহাসবিদর দ্বারা রচিত।

রক্ষণশীল ইতিহাসবিদ রচিত বইগুলো কী স্কুল-কলেজ পর্যায়ে পাঠ্যক্রমে অন্তভূর্ক্ত হয়েছে?

শিক্ষার্থীদের একটা বিষয়ে বুঝতে শিখাতে হবে যে, ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর যাচাই বাছাইয়ের জন্য তাদেরকে সম্ভাব্য সবরকমের ঐতিহাসিক বিশ্লেষণগুলোকে খতিয়ে দেখতে হবে। প্রমাণ এবং যুক্তি নির্ভর এরকম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের ফলেই কেবল তারা ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর উপসংহারে পৌঁছুতে পারবে ফলে ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর পারস্পরিক যোগসূত্র, সেগুলোর অতীত সম্পর্কে ধারণা এবং সেই সঙ্গে হিন্দুত্ববাদীদের মিথ্যে ঐতিহাসিক প্রচেষ্টা, বক্তব্য বা বিশ্লেষণ কিংবা ইতিহাসে  ধর্মের প্রভাবগুলো তারা স্পষ্টত বুঝতে পারবে।  ইতিহাসের বিকৃতিগুলো বোঝার ক্ষেত্রে  শিক্ষার্থীদের জন্য এটা একটা দারুণ প্রয়াস। তাছাড়া, আমরাও এটা প্রত্যাশা করি শিক্ষার্থীরা মুক্তমনা হয়ে উঠুক এবং বুঝতে শিখুক যে ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণসমুহ অনেক বিস্তৃত এবং সেখানে নানারকম সিদ্ধান্তকে গূরুত্ব দিয়েই উপসংহারে পৌঁছুতে হয়।

আমাদের দেশে অনেক শিক্ষার্থীর কাছেই ইতিহাস একটি বিরক্তিকর বিষয়। আপনার কি মনে হয় এই পদ্ধতি গ্রহণ করা সম্ভব হবে?

অবশ্যই সম্ভব। যদি লোকজন এটা বুঝতে পারে যে ইতিহাস নির্দিষ্ট বুলি শেখানো কোনো তোঁতা পাখি নয় বরং ইতিহাস আসলে অতীতকে বুঝতে শিখা। এই বিষয়ে সংলাপ বসানো যেতে পারে। আমি আগ্রহী তবে হিন্দুত্ববাদীরা আগ্রহী হবে না কেননা যেই মুহূর্তে ইতিহাসগুলোর ভিন্ন ব্যাখ্যা তাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে তাদের একরৈখিক বিশ্লেষণ সেগুলোকে মেনে নিতে পারবে না।

কেমন করে একটি নির্দিষ্ট রাজবংশ একটি সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করল? কেমন করে তারা সাম্রাজ্যের বিস্তার করেছিল, সেটির পরিচালনা করা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, নিত্যদিনের কার্যক্রম ঠিক রাখা এই সব বিষয়গুলোকেও বিশ্লেষশ করতে হবে।

যেমন ধর মৌর্য যুগে যোগাযোগের মাধ্যম কি ছিল- পাটলিপুত্র থেকে তক্ষশিলায় যেতে কত সময় লাগত। যদি ধরে নিই দুই মাস তাহলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা কেমন ছিল। এইরকম প্রশ্নগুলো উপস্থাপন করার কথাই আমরা বলছি। আমরা শুধু এটুকু বলেই শেষ করতে চাই না যে, অশোক ভাল রাজা ছিলেন পাশাপাশি তিনি তো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীও ছিলেন। ফলে একটি সাম্রাজ্য বলতে সেখানকার কাঠামো নিয়ে আলোচনা করা জরুরি, তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কেমন ছিল, তারা কি বাণিজ্য করতো, কাদের সঙ্গে বানিজ্য করতো, তাদের সমৃদ্ধির কারণ কী ছিল, কী কারণে সেই সাম্রাজ্যের পতন হয়েছিল এই বিষয়গুলো ইতিহাসে একরৈখিক পর্যালোচনায় বাদ পড়ে যায়।

যদি বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল রক্ষণশীল না হয়, তাহলে আপনার কী ধারণা অন্য রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসলে আরো উদার হবে?

অনেক বেশি উদার হবে। (NCERT) ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং তখনি যাত্রা শুরু করেছিল যখন আমরা কয়েকজন স্কুল পাঠ্যবইগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করেছি। আমরা দেখিয়েছি যে, তারা কেমন বাজে ছিল। সত্যি কথা হলো স্কুল পর্যায়ে খুব নিম্নমানের বই শিশুদের পড়ানো হত। আমরা এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিশদ প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তখন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন মোহম্মদ-আলী কারিম ছাগলা। তিনি বলেছেন, তোমরা ইতিহাসবিদরা এমন আপত্তি জানাচ্ছ তাহলে তোমরা কেন এই বিষয়ে বই লিখছ না? ছাগলা সাহেব আমাদের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের দিয়ে স্কুলের পাঠ্য বই লিখিয়েছেন। এটা সেই সময়ে সরকারের একটা উদারতা নিঃসন্দেহে। আমরা বেশ কিছু পাঠ্যবই সেই সময়ে রচনা করেছিলাম যা সত্যি স্কুলপাঠ্যতে এক বিরাট পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল।

এমনকি বর্তমানে সেই বইগুলোকেও পুনরায় সংস্করণ করা প্রয়োজন আর তা করবেন এই প্রজন্মের পরিশ্রমী, মেধাবী ইতিহাসবিদরা। কেননা বিগত ত্রিশ বছরে ইতিহাস রচনার অনেক পথ পরিক্রমার পরিবর্তন হয়েছে। সরকারের উচিত ইতিহাসবিদদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে বইগুলোর সংস্করণ করা। বিষয়টা এমন নয় যে কেউ একটি পাঠ্যবই লিখলেই সেটি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে। বরং বইগুলোতে ইতিহাসের নানা মতামতকে স্থান দিতে হবে ফলে কেউ এটা বলতে পারবে না যে বইগুলো বামপন্থী ইতিহাসবিদ দ্বারা রচিত।

আপনি কি কয়েকজনের নাম বলতে পারবেন?

প্রথমে আর সি মজুমদার, বিশ্বেশ্বর প্রসাদ, বি পি মিশ্রা, ডি শর্মা তাদেরকে নিয়ে শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে যোগ হয়েছেন এস গোপাল, নুরুল হাসান এবং অন্যরা।

যদি বিগত পঞ্চাশ বছরে ভারতীয় ইতিহাসের কোনো একক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা বলি তাহলে সেটি কী বলে মনে হয় আপনার কাছে?

প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এটা একনায়কতন্ত্র থেকে ফ্যাসিবাদের হাতে থেকে আমাদের বাঁচিয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতীয় ইতিহাসে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত ছিল।

আপনার কী মনে হয় এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব নেই?

হিন্দুত্ববাদীদের সংখ্যা বেড়েছে। আর এই হিন্দুত্ববাদ আমাদেরকে একশ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। এটা একটা বড় বাঁধা যে আমরা নিজেদেরকে একটি আধুনিকায়ন সমাজের ভাবতে পারি না। দীপা মেহতার ফায়ার চলচ্চিত্র প্রকাশে সিনেমা হল ভাঙচুর করা হয়েছে, মকবুল হোসাইনের ছবি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এগুলো মোটেও আধুনিক সমাজের লক্ষণ নয়।

আপনি সদ্য একটি কর্মশালা শেষ করেছেন। সেখানে কি হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে ইতিহাস নিয়ে কোনো আলোচনার সুযোগ হয়েছিলো?

এটা সম্ভব নয়। কেননা তারা এধরনের কর্মশালাগুলোতে আসেন না। আর যদি আসেনও এ বিষয়ে কোনো আলোচনা করেন না। তারা আলোচনা কিংবা তর্ক-বিতর্কের মানুষ নন। তারা হলো গোঁড়া মানসিকতার। আমার দৃষ্টিতে তাদের গোঁড়ামির সংজ্ঞা হলো এই-তারা কিছু গৎবাঁধা প্রশ্নের উত্তর দেন। যেগুলোর উত্তর ঠিক করা থাকে। কেউ ঐসব প্রশ্নের বাইরে কোনো প্রশ্ন উপস্থাপনা করে না।

একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে আলোচনা করছিলেন অরুণ শৌরী যিনি ইতিহাস নিয়ে নিকৃষ্ট গল্পগুলো লিখেছিলেন এবং একজন ইতিহাসবিদ। তাদের আলোচনার ইস্যু ছিল বৈদিক যুগে গোমাংস খাওয়া নিয়ে। সেই ইতিহাসবিদ যখন বৈদিক যুগে গোমাংস খাওয়ার প্রমাণ আছে বলে কিছু রেফারেন্স এর কথা বলছিলেন এবং সেটির কারণ তুলে ধরছিলেন সঙ্গে সঙ্গে সে তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করছে কোথায় কোন শ্লোকে তা উল্লেখ রয়েছে তা বলার জন্য । ইতিহাস আসলে এভাবে লিখিত হয় না।

তুমি বলতে পার না এই হচ্ছে প্রমাণ। তোমাকে সেটির তথ্য নিয়ে চিন্তা করতে হবে, তখনকার সময় নিয়েও বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে।

যিনি অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন তিনি জানতে চাইছেন গোমাংস খাওয়ার রেফারেন্স আছে কি নেই?

আমি আগেও বলেছি ইতিহাসের কোনো প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ অথবা না দিয়ে হয় না। এটা কোনো ঐতিহাসিক প্রক্রিয়াও নয়।

রাজ্য সরকারের প্রভাবে এই সময়ে ইতিহাস শিক্ষায় কোনো বিকৃতি ঘটছে কি? 

আমার মনে ইতিহাস শিক্ষার সঙ্গে  রাষ্ট্রকে মিলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। ইতিহাস শিক্ষা পদ্ধতিটিকে আরো বেশি জ্ঞানের ঐতিহাসিক ধারায় পরিচালিত করতে হবে। আর এভাবেই আমরা ইতিহাসের সঠিক শিক্ষাটা পাব। ইতিহাস রাষ্ট্র পরিচালনায় এক সরকারের বিরুদ্ধে আরেক সরকারের মতাদর্শিক কোনো প্রচারণাও নয়। কিন্তু হিন্দুত্ববাদীরা এটাই করার চেষ্টা করছে। আর এটা নিয়েই যতসব বিতর্ক।

নতুন গঠিত রাষ্ট্রে জাতীয়তাবাদ এবং ইতিহাসের একটি ঘনিষ্ট যোগসূত্র থাকে। সেক্ষেত্রে অনেক বেশি নিরপেক্ষ ইতিহাস জ্ঞান এবং পর্যালোচনা  প্রয়োজন যেন জনগণের এটা মনে না হয় এই ইতিহাসগুলো সরকার তার নিজ মতাদর্শের জায়গা থেকে তৈরি করেছে।

মনে কর, আমি এমন একটি দৃষ্টান্ত গ্রহণ করেছি যা ভারতীয় জাতীয়তাবাদী ইতিহাসবিদদের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের দৃষ্টিকোণের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এর অর্থ এই নয় যে আমি ভারতীয় জাতীয়তা বিরোধী । এটার মানে এই যে আমার দৃষ্টিভঙ্গি তাদের চেয়ে ভিন্ন।

অধিকাংশ ভারতীয় ইতিহাস শাসকদের দৃষ্টিকোণ থেকে রচিত হয়েছে? এই ধারণা কতটুকু সঠিক?

অধিকাংশ কথাটা সত্য। এখন সমাজের অন্যান্য অনেক স্তর থেকেও ইতিহাস লেখা শুরু হয়েছে। দেখা যাচ্ছে সেখানেও হিন্দুত্ববাদী দৃষ্টিভঙ্গীগুলো প্রকাশ পাচ্ছে। শাসকদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রচিত ইতিহাসের দুটি দৃষ্টিকোণ রয়েছে। শাসক হিন্দু নাকি মুসলিম ছিলেন তার উপর ভিত্তি করে বিশ্লেষণগুলো তৈরি হয়। তুমি যদি অন্য আরেকটি সামাজিক স্তর থেকে এই বিশ্লেষণগুলো দেখার চেষ্টা কর তাহলে দেখবে দুটি গোষ্ঠীই তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সামাজিক আচারের জায়গা থেকে পরস্পরকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ভারতীয় ইতিহাসের মিথস্ক্রিয়াগুলি যদি দেখতে শুরু কর এবং উপলব্ধি কর দেখবে সেখানে হিন্দু-মুসলিম বিষয়টি কোনো মানেই সৃষ্টি করেনা কেননা মধ্যযুগীয় ভারতীয় সমাজের অন্যান্য মাত্রাগুলি আরও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর এটা অতীতকে ভিন্নভাবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি উন্মুক্ত করে।

সমাপ্ত

সূত্রঃ ইন্টারনেট

প্রথম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন

Facebook Comments

comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

scroll to top