এপিকটেটাসের ডিসকোর্স: বন্ধুত্ব প্রসঙ্গে, অনুবাদ: শাকিলা পারভীন বীথি

[এপিকটেটাস প্রাচীন গ্রীসের একজন স্টয়িক দার্শনিক ছিলেন। তিনি ফ্রিজিয়ার হিয়ারপলিসে (বর্তমানে তুরস্কর পামুকেল) দাস পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং রোমে বসবাস করেন তার নির্বাসনের পূর্ব পর্যন্ত। এরপর  তিনি উত্তর-পশ্চিম গ্রীসের নিকোপলিসে চলে আসেন এবং সেখানেই তাঁর জীবনের বাকি সময় কাটান। তাঁর শিক্ষা তাঁর ছাত্র অ্যারিয়ানের দ্বারা লেখা হয় এবং পরবর্তীতে অ্যারিয়ান তা তাঁর ডিসকোর্সে প্রকাশ করেন। Epictetus’ Discourse – Chapter : Of Friendship জর্জ লং কৄত ইংরেজি থেকে অনুদিত]

যে বিষয়ে একজন মানুষের মনোযোগ নিবেদিত হয়, সম্ভবত তা সে ভালবাসে। তবে কি মানুষ কখনো এমন বিষয়ে মনঃসংযোগ করে যা তার বিবেচনায় মন্দ? কোনভাবেই না। অথবা জীবনের তুচ্ছতার প্রতি তার কি মানসিক নিবেদন থাকে? না, তাও থাকে না। এর অর্থ হলো, কেবল ভালত্বের দিকেই একজনের মনোযোগ থাকে। ভালত্বের প্রতি যদি মনোযোগ থেকে থাকে, তবে বলা যায় তাতে ভালবাসাও থাকে।
যে ব্যক্তি ভালত্বকে বুঝতে পারে, সেই কেবল ভালবাসতে পারে। কিন্তু যে ব্যক্তি শুভ থেকে অশুভকে আলাদা করতে পারে না কিম্বা আলাদা করতে পারে না শুভ-অশুভ থেকে জীবনের তুচ্ছতাকে, কিভাবে তার পক্ষে ভালবাসা সম্ভব? সুতরাং কেবল প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিই ভালবাসতে সক্ষম।
“কিভাবে? আমি তো প্রজ্ঞাবান নই, তথাপি আমি আমার সন্তানকে ভালবাসি।”
আমি প্রতিবাদ না করে পারছি না। প্রথমেই যে তুমি তোমাকে প্রজ্ঞাহীন বলে পরিচিত করাচ্ছো তা আমাকে বিস্মিত করছে। তোমার মাঝে কিসের অভাব? তুমি কি তোমার ইন্দ্রিয়জাত উপলব্ধির আশ্রয় নাও না? তুমি কি সেসব খাবার, আবাসন বা পোশাকের ব্যবস্থা কর না যা তোমার জন্য প্রযোজ্য? তবে কেন স্বীকার করছো না যে তোমার প্রজ্ঞার প্রয়োজন?
সত্য হলো, আপাত প্রতীয়মান তুমি বিস্মিত হও, বিব্রত হও, এবং এতে করে বাহ্যিক সত্যতাই বিজয়ী হয়। তুমি একই বস্তুকে কখনো শুভ, কখনো অশুভ, কখনো কিছুই বলছো না। এর কারণ তুমি বেদনা, ভয়, ঈর্ষা, দ্বিধাগ্রস্ততা ও পালাবদলের ক্রীতদাস। এই কারণেই তুমি নিজেকে প্রজ্ঞাহীন ভাবছো। ভালবাসার সম্পর্কেও কি তোমার স্বভাবজাত পরিবর্তন ঘটছে না? অর্থ, আনন্দ ও বস্তুগত ভোগ কখনো তোমার কাছে ভাল, কখনো মন্দ হয়ে ওঠে না? তুমি একবার ভালত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আরেকবার মন্দের। একই ব্যক্তির মূল্যায়নে মানসিকতার পালাবদল কি ঘটছে না? একই মানুষ তোমার কাছে কখনো ভাল, কখনো মন্দ হয়ে উঠছে। কখনো দেখাচ্ছো দয়া, কখনো বিরোধ। এই কারও প্রশংসা করছো তো, একটু পরেই চলছে কলঙ্ক লেপন।
“হাঁ, আমার ক্ষেত্রে এমন হামেশাই ঘটে।”
ভাবো, এভাবে কারও দ্বারা যে ব্যক্তি একবার প্রতারিত হয়, সে কি আর তার বন্ধু হতে পারে?
“নিশ্চিতভাবেই না।”
অথবা যার বন্ধুত্ব বা ভালবাসার ক্রমাগত পালাবদল ঘটতে থাকে, সে কি সুনাম ধরে রাখতে পারে?
“না, সে তা পারে না।”
অথবা যে একবার যার কুৎসা রটায়, আবার যদি তার স্তুতি গায়?
“না, সেও পারে না।”
কুকুরছানাগুলোর আদর আর আহ্লাদময় মাখামাখি দেখে তুমি ভাবতেই পারো এর চেয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ আর কি হতে পারে? কিন্তু যদি তাদের বন্ধুত্ব বুঝতে চাও, এক টুকরো মাংস ছুঁড়ে দাও তাদের মাঝে। তবেই তুমি বুঝবে তাদের বন্ধুত্ব কি? আর তুমি ও তোমার সন্তানের মাঝে একখানি সাম্রাজ্য ছেড়ে দাও, খুব শীঘ্রই দেখবে কিভাবে সে তোমাকে আর তুমি তাকে পরাজিত করার নির্মম খেলায় মেতে উঠেছো। তখন তুমি নিশ্চয়ই বলে উঠবে “হায় ঈশ্বর! এ কেমন সন্তান আমি প্রতিপালন করেছি। সে তো আমাকে জীবন্ত কবর দেবে!”
একজন রমণীকে ছেড়ে দাও বয়স্ক পিতা আর আর তার সন্তানের মাঝে। দেখবে পিতা-পুত্র কিভাবে একই রমণীর প্রেমে পড়ে। অথবা কেবল সুনাম বা বিপদগ্রস্ততাকে হস্তক্ষেপ করতে দাও দু’জনের মাঝে, দেখবে অ্যাডমেটাসের পিতার কথাগুলোই তোমার কথা হয়ে উঠবে।
তুমি যে শিখা দেখে মত্ত হয়েছ ভালবাসায়, তোমার পিতা কি তা দেখে হতে পারে না? সেই রমণীকে দেখে যদি তুমি মূর্চ্ছা যেতে পারো, তোমার পিতা কি পারে না?
কি ভাবছো তুমি? সেই পিতাই কি তার শিশু সন্তানকে ভালবাসতো না বা তার সন্তানের জ্বর হলে তার হৃদয় বেদনার্ত হতো না? এবং সে কি সন্তানের অসুস্থতার কষ্ট নিজে বহন করার প্রার্থনায় রত হতো না? তথাপি ঘটনাচক্রে তারা যখন দাঁড়ালো বিপরীত অবস্থানে, দেখো কি কর্কশ হয়ে উঠল সেই স্নেহের বন্ধন! ইটিওক্লিস ও পলিনাইসিস কি একই পিতার সন্তান ছিলেন না? তারা কি একই অন্নে প্রতিপালিত হন নি? স্নেহ, প্রেম আর সৌহার্দ্যের বন্ধনে দিবারাত্রির আখ্যান কি তাদের একই প্রাসাদকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় নি?
পলিনাইসিস: “কিভাবে এই প্রাসাদের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার রাখো তুমি?”
এটিওক্লিস: “তুমিই বা কে আমায় এইভাবে বলার?”
পলিনাইসিস: “আমি তোমার রক্তের বদলে হলেও নিজেকে রক্ষা করব?”
এটিওক্লিস: “এমন প্রতিশোধের ইচ্ছে আমারও কি নেই?”
হ্যাঁ! এমনই নির্মম ছিল তাদের উচ্চারণ!
সুতরাং, প্রতারিত হয়ো না। কোন জীবন্ত আত্মা এতটা ভয়ঙ্কর রূপ কখনই ধারণ করতে পারে না যতটা পারে তার নিজ প্রয়োজনে। এর পথ ধরেই ঘৃণিত, পরিত্যাজ্য, অভিশপ্ত হচ্ছে পরিবার-পরিজন। নিজের প্রয়োজনের কাছে অন্ধত্ব যেন প্রকৃতিগত। নিজের প্রয়োজনের সামনে তুচ্ছ হয়ে উঠছে পিতা-ভাই, স্ত্রী-সন্তান, দেশ, এমন কি স্রষ্টাও।
দেবতা যখন প্রয়োজনের পথে বাধা হয়েছে আমরা তাদেরও অপবাদ দিতে কুণ্ঠাবোধ করিনি। আমরা তাদের সম্মান ধূলোয় লোপাটের চেষ্টা করেছি, তাদের মন্দির পুড়িয়ে দিয়েছি। যেমনটা আলেক্সজান্ডার পুড়িয়ে দিয়েছিলেন তার ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে।
সুতরাং কারো আগ্রহ যখন দায়িত্ব, পবিত্রতা, দেশ, পরিবার-পরিজনকে কেন্দ্র করে বিকশিত হয়, তখন সকল কিছু নিরাপদ থাকে। কিন্তু যখনই সে হয়ে ওঠে নিজের প্রয়োজনের পূজারী তখনই তার আগ্রাসী চাহিদা সরব হয়ে ওঠে। আর বন্ধুত্ব, পরিবার, জন্মভূমি ও ন্যায্যতাকে মাড়িয়ে ভস্মিভূত করে দেয়। যেখানে “আমি ও আমার” সব কিছু জড়িয়ে আছে, সেদিকেই সকল জীব ধাবমান। সকল জীবের এই গতি তাদের ক্ষমতার শারীরিক প্রকাশ, যা কখনো মানসিক, কখনো বাহ্যিকতায় নিয়ন্ত্রিত।
আমি কেবল তখনই একজন সত্যিকারের বন্ধু, সন্তান বা পিতা হবো যখন আমি নিজেকে খুঁজে পাবো নিজের ইচ্ছার অধীনে। নিজের চারিত্রিক দৃঢ়তা রক্ষিত হবে স্বেচ্ছায়, যেন আমি অন্যের সাথে সম্পর্ক রক্ষায় সম্মান, সংযম, সরল বিশ্বাস, সহনশীলতা এসব গুণাবলী নিজের মাঝে লালন করতে পারি। যা কিছু মহৎ তা থেকে যদি আমি নিজেকে আলাদা করে ফেলি তবে এপিকিউরিয়াসের মতই হবে আমাদের ভাষ্য। তার মতই আমাদের তখন বলতে হবে, “জীবনে মহত্ত্ব বলে কিছু নেই, মহত্ত্ব কেবল মন্তব্যমাত্র।”
এমন অজ্ঞতা থেকেই এথেনীয়রা যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল লেসিডেমোনিয়ানদের সাথে আর থিবিয়ানরা উভয় জাতির সাথে। তেমনিভাবেই পার্সিয়ানরা গ্রিস এর সাথে আর মেসিডোনিয়ানরা উভয়ের সাথেই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। যেমনটা আমরা দেখেছি রোমান আর গ্যাটোদের বেলাতেও। দূরবর্তী সময়ের রশিতে এভাবেই দামামা বেজেছিলো ট্রজান যুদ্ধের। পেরিস মেনেলাউস এর শুধু অতিথিই ছিল না, তাদের মাঝে বন্ধুত্বও ছিল। কেউ অস্বীকার করতে পারতো না যে, তাদের হৃদয়ের উষ্ণতার বাটোয়ারা বন্ধুত্ব ছাড়া ভিন্ন কিছু। কিন্তু যখনই তাদের মাঝে এসে পড়ল এক প্রলুব্ধকারী শিকার, এক মোহিনী রমণী, ঠিক তখনই যুদ্ধ হয়ে উঠলো অনিবার্য পরিণতি। বর্তমানে যদি এমন ভ্রাতৃবৃন্দকেও দেখ, যাদের আত্মিকভাবে এক ও অবিচ্ছিন্ন মনে হয় তবু তাদের ভালবাসার সত্যতা নিয়ে খুব দ্রুত মন্তব্য করে বসো না; যদি তারা শপথও করে যে তাদের জীবনে বিচ্ছিন্নতা আসা অসম্ভব।
একজন মন্দলোকের চালিকা-নীতি বিশ্বস্থতার মানদণ্ডে বিচার্য নয়; কেননা তা ধোঁয়াশার মোড়কে আচ্ছাদিত এবং দ্বন্দ্বে ভরপুর। নির্বোধের মতো সত্যের সন্ধান করতে যেও না। দেখতে যেও না তাদের পিতা-মাতা একই ছিল কিনা বা তারা একই অন্ন-বস্ত্র বা শিক্ষায় প্রতিপালিত কিনা! দেখবে তাদের চালিকাশক্তি কি বাহ্যিকতা, না স্বীয় ইচ্ছা? যদি দেখ, তাদের সম্পর্কের মূল নিয়ামক বাহ্যিক শর্তে আবর্তিত, তবে কিছুতেই তুমি তাদের বন্ধু বলতে পারবে না। হয়তো তারা বিশ্বস্থ, স্থির, স্বাধীন বা সাহসী কিন্তু তুমি যদি বিজ্ঞ হও তবে তাদের সত্যিকারের মানুষও বলতে পারবে না।
মানবতার কোন নীতিতে মানুষে মানুষে কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি ও কাউকে কলঙ্কিতকরণের স্থান নেই; স্থান নেই পাবলিক আসেমব্লিতে অধিকার আরোপের জন্য বুনো পশুর মতো আচরণ করার যা তারা নির্জন প্রান্তরে বা পাহাড়-পর্বতে করে থাকে; স্থান নেই সুবিচারের আদালতকে দস্যুতার গুহা বানানোর।
এভাবেই কেবল অনিয়ন্ত্রিত ইচ্ছা একজন মানুষকে বিপথগামী করে। কেননা অবারিত ইচ্ছার প্রাবল্য একজনকে করে তোলে অসংযমী, প্রতারক আর পরনির্ভরশীল। কিন্তু যদি এমনটা দেখ যে, কারো ভালত্ব তার ইচ্ছার ফসল এবং তার ব্যবহার যথাযথ তবে এই অনুসন্ধানের দরকার নেই যে, তারা পিতা-পুত্র, বহুদিনের চলার সঙ্গী বা চেনা কেউ। তুমি নির্দ্বিধায় বলতে পার তারা পরস্পরের বন্ধু, তারা বিশ্বস্থ, তারা সুবিচারক। যেখানে বিশ্বাস, বিনয় আর সদগুণাবলির লেনদেন আছে সেই জায়গা ছাড়া বন্ধুত্ব আর কোথায় আছে?
“আচ্ছা। দীর্ঘদিন হলো একজনের কাছ থেকে আমার প্রতি তার সমীহের সর্বোচ্চ মূল্য পেয়ে আসছি। সে কি আমায় ভালোবাসে তবে?”
কিভাবে তুমি তা নিশ্চিত হতে পারো, যদি সে হয় একজন নির্বোধ মানুষ এবং শুধু মূল্য দেয় তার ঘোড়া ও জুতোর বিষয়টিকে? কিভাবে জানবে তুমি যখন ব্যবহার্য থাকবে না তখন সে তোমাকে জীর্ণ আসবাবের মতো আস্তাকুঁড়ে ফেলে দেবে না?
“বুঝলাম। কিন্তু আমার স্ত্রী যার সাথে আমি বহু সময়ের পথ পাড়ি দিয়েছি, তার বেলা? ”
কত সময় ধরে এরিফাইলি সঙ্গী ছিল অ্যামম্ফিয়ারসের যে কিনা তার বহু সন্তানের জননী? কিন্তু এক সন্দেহের বুদ্বুদ এলো তাদের মাঝে। সন্দেহটা কি নিয়ে ছিলো জানতে চাও? সেটা একটি মিথ্যা অভিযোগ ঘিরে নানা রকমের গুঞ্জন। অথচ সেটাই তাকে হিংস্র বাঘিনীতে রূপান্তরিত করলো; বিচ্যূতি হল তাদের সকল ভালবাসার। স্ত্রী-রূপ বা মাতৃসত্তাও তাকে শক্তি দিল না সেই যন্ত্রণার ভার সইবার।
তোমরা যারা বন্ধুতা চাও বা বন্ধুত্বের দ্বার উন্মোচনে চিন্তাশীল, উপড়ে ফেল ভালো-মন্দের এইসব আজগুবি বিবেচনাবোধ। ঘৃণা করতে শেখ বা মন থেকে মুছে ফেল সেই সব সমীকরণ যা তোমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
কেউ যদি তা করতে পারে তবে সে প্রথমেই আত্মপীড়ন, আত্মদ্বন্দ্ব, মানসিক দোলাচল ও অকারণ মানসিক পরিবর্তনের হাত হতে রক্ষা পাবে। দ্বিতীয়ত, সে সবার বন্ধু হয়ে উঠবে; হয়ে উঠবে ধৈর্য্যশীল, নম্র-ভদ্র ও দয়াশীল। ক্ষমা করতে পারবে সেইসব মানুষকে যারা তার অতীব প্রয়োজনকে আনাড়িপনায় আর অদক্ষতায় বিফল করবে। সে কখনই কারো প্রতি ভয়ংকর হতে পারবে না। কারণ সে প্লেটোর সেই মতবাদের মতোই বিশ্বাস করে, “আত্মা কখনই স্বেচ্ছায় বঞ্চিত হয় না সত্যতা থেকে।”
তুমি অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে হয়তো কারো সাথে পথ চলবে যেমন একসাথে অন্নগ্রহণ, একই ছাদের নিচে ঘুমানো, এক জাহাজের সহযাত্রী হওয়া, সর্পকূলের মতো একই পিতামাতার সন্তান হতে পার। যতক্ষণ না তোমরা নিজেদেরকে হিংস্র আর নির্মম বিবেচনাবোধ থেকে বিরত রাখছো ততক্ষণ পর্যন্ত এমন সম্পর্ক থাকা সত্বেও তোমরা বুঝতে পারবে না বন্ধুত্ব কি।

 

Facebook Comments

comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

scroll to top